বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (১২ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে খুলনা ও বরিশাল সিটি ভোট সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন। সিসি ক্যামেরা মনিটরিংয়ের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
বরিশালের ঘটনায় প্রশ্ন করা হলে আহসান হাবিব খান বলেন, বরিশালের পরিবেশ দেখলাম খুব ভালো ভোট হচ্ছে। এর মধ্যে এটা আকস্মিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। প্রথমে দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও পরে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে অন্যায় করেছে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে যা পাচ্ছি আমরা অনেক হ্যাপি। সার্বিকভাবে ভোটের অবস্থা ভালো একটা ঘটনা ছাড়া। ৩০ শতাংশ ভোট হয়েছে। দিন শেষে ৪০ শতাংশ হবে। বরিশালে র্যাব বিজিবিসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে করে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ওখানে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ সবাইকে নিয়োজিত করে বিশেষ করে নদীর ওপাশ থেকে যারা আসছিল, নৌ-পুলিশ (কোস্টগার্ড) দিয়ে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে, তারা যেন এখানে ঢুকে বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি করতে পারে। যেই ব্যক্তি এই অন্যায় করেছে, তাকে উচিত শাস্তি পেতেই হবে। এতে আমাদের তরফ থেকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যাশা করা হচ্ছে ৪০ শতাংশের মতো ভোট কাস্ট হবে। যদিও এই কমিশনার সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি হবে। কোনো কোনো কেন্দ্রে এটা ৫০ শতাংশ হতে পারে।
সিসি ক্যামেরা কাজ করছে না অনেক কেন্দ্রে, বিষয়টির কারণ জানতে চাইলে এই কমিশনার আরও বলেন, ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথের কারণে লাইভ করা বিঘ্নিত হলেও ক্যামেরায় সব রেকর্ড হচ্ছে। সিসি ক্যামেরা থাকায়ই দুষ্কৃতিকারীদের জন্য হুমকি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব খান বলেন, ভোটের এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বরিশালের টোটাল ভোটকেন্দ্রগুলো, বরিশাল শহর পুরোটাই প্রটেক্টেড।
জানা যায়, বরিশালে হাত পাখা প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ৮৭ নম্বর কেন্দ্র সাবেরা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ২২ নং ওয়ার্ডের ৮৭ নং কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখি নৌকার সমর্থকরা ভোট কক্ষে ঢুকে ভোটারদের বলছেন- ‘নৌকায় ভোট দিলে দাও না হলে চলে যাও’। আমি প্রিজাইডিং অফিসারকে এসব বিষয় বলছিলাম। তখন নৌকার কর্মীরা এসে আমাকে ও আমার সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করে দেয়। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে অভিযোগ দিয়েছি।
এসেময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যত হামলা হোক ভোটের শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনে আছি। নির্বাচনের পর আন্দোলনের কথা বলে জানান, এই সরকারকে পতন না করে আমি ঘরে ফিরব না। আমি তো কোনো অন্যায় করিনি। যারা হামলা করেছে তাদের বাবার বয়সী আমি। আমাকে মারধর করার কী কারণ? আমার দাঁড়ি পাকা, আমি একজন আলেম মানুষ। এতবড় পিশাচ হতে পারে মানুষ? এসব কী হচ্ছে? এটা কেমন নির্বাচন?