মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখল বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ সময় পাড় করতে থাকা দলটা আজ যেন ঘোলা জলে হাবুডুবু খেল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেন দাঁড়াতে পারল না। ব্যতিক্রম শুধু এক তাওহীদ হৃদয়। তার অর্ধশতকে ভর করে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ৯ উইকেটে ১৬৯ রান তুলে।
দলের পক্ষে একাই লড়াই করেন হৃদয়। দলের সবচেয়ে তরুণ ক্রিকেটার হয়েও আফগান বোলারদের বেশ ভালোভাবেই সামলিয়েছেন তিনি। সাকিব-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞরা তো বটেই, পারেনি আফিফ, মিরাজও তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। দলের নবম উইকেট হয়ে যখন সাজঘরে ফেরেন, ততক্ষণে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক। ৬৯ বলে ৫১ রান করে হৃদয়।
অবশ্য প্রথম ১০ ওভার ব্যাটিং কঠিন হবে, তামিম নিজেই এমনটা বলেছিলেন আগের দিন। সুবাদে আজ বেশ দেখে শুনেই খেলছিল দলের দুই ওপেনার। ফলে প্রথম ৬ ওভারে বাউন্ডারি এসেছিল মোটে একটি। তবে শেষ রক্ষা হলো না। ফের ফারুকির শিকার তিনি। এই নিয়ে চার ইনিংসে চারবার ফারুকির কাছে পরাস্ত হলেন এই ওপেনার।
৬.৫ ওভারে ৩০ রানে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। তামিম ইকবাল ফিরেন ২১ বলে ১৩ রান করে। এদিকটায় আবারো ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন লিটন দাস। যেই না হাত খুলে বাড়াতে শুরু করলেন রানের গতি, তখনই থামতে হলো তাকে। থামিয়েছেন মুজিবুর রহমান। তুলে মারতে গিয়ে রহমত শাহকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৩৫ বলে ২৬ রান করে।
পরের ওভারে এসেই শান্তকে তুলে নিলেন মোহাম্মদ নাবি। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটারকে সেলিম শাফির ক্যাচ বানান তিনি। অবশ্য মাঠে নেমে দারুণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এই বাঁ হাতি। ১৬ বলে ১২ রানেই সন্তুষ্ট থাকত্ব হলো তাকে। ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
আজ একেবারেই সাবলীল ছিলেন না সাকিব। যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। একটা বলও পারেননি সাচ্ছন্দ্যে খেলতে। ৩৮ বল থেকে মোটে ১৫ রান করেন তিনি। মাত্র ৩৯.৪৭ স্ট্রাইকরেট তার স্বাচ্ছন্দ্যহীনতার প্রমাণ বহন করে। তাছাড়া ছয় ওভারের বেশী বলখেলেও একটা বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি সাকিব।
১০৯ রানে সাকিবের বিদায়ের পর মাঠে আসেন মুশফিক। তবে ডিপেন্ডেবল তকমাটার মূল্য দিতে পারেননি তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার ফেরেন ৩ বলে ১ রান করে। মুশফিকের স্ট্যাম্প ভাঙেন রাশিদ খান। দলীয় সংগ্রহ তখন ১১২ রানে ৫ উইকেট।
প্রত্যাবর্তন রাঙাতে পারেনি আফিফ হোসেনও। নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ তিনি। ফেরন রাশিদ খানের শিকার হয়ে ৮ বলে ৪ রান করে।
মিরাজও পারেনি এইদিন আফগান আগ্রাসন রুখতে। ফিনিশিংয়ে নেমে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি মনে ভালো ইনিংস উপহার দিলেও আজ থামেন মোটে ৫ রানে, ফারুকীর শিকার হয়ে।
১৩৯ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর সেখান থেকে তাসকিন আহমেদের ৭, হাসান মাহমুদের ৮* রান তাওহীদ হৃদয়কে সহায়তা করে। আফগানিস্তানের হয়ে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন ফারুকী, দুটো করে উইকেট যায় রশিদ খান ও মুজিবুর রহমানের ঝুলিতে।