ভারতের মধ্যপ্রদেশে গতকাল সোমবার হয়েছে এক মহানাটক। এদিন মধ্যরাতে বিজেপিকে আটকাতে পদত্যাগ করেছেন কমলনাথ মন্ত্রিসভার ২০ সদস্য। সবার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠন করতে চলেছেন কমলনাথ।
পদত্যাগের বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ বলেন, ‘মাফিয়াদের সাহায্যে অচলাবস্থা তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। ওদের সফল হতে দেব না।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজসহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। কংগ্রেসের বিধায়করা হঠাৎ করে বেপাত্তা হয়ে যান। এমনকি তারা ফোন ধরাও বন্ধ করে দেন। মধ্যপ্রদেশের ছয়জন মন্ত্রীসহ ১৭ জন বিধায়ককে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বেঙ্গালুরুতে। সকলেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার ঘনিষ্ঠ। এরপরই সিন্ধিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করে দেয় কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এর মধ্যে সোনিয়ার নির্দেশে দিল্লি থেকে বিকেলে ভোপালে ফেরেন কমলনাথ। এরপর দলীয় বৈঠকে বিজেপিকে আটকাতে গণপদত্যাগের কৌশল নেয় কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের কাছে পদত্যাগপত্র দেন ২০ জন মন্ত্রী।
কমলনাথ নতুন করে মন্ত্রিসভা সাজাবেন বলে জানা গেছে। সেই মন্ত্রিসভায় কিছু বিদ্রোহী বিধায়কদের জায়গা দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন বৈঠকের পর কমলনাথ বলেন, ‘মাফিয়াদের সহযোগিতায় সরকারে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। ওদের সফল হতে দেব না। মধ্যপ্রদেশের মানুষের ভরসা ও ভালোবাসা আমার শক্তি। সরকারে অচলাবস্থা তৈরি করার চেষ্টাকে সফল হতে দেব না। সাধারণ মানুষ সরকার তৈরি করেছে।’
এদিকে, মধ্যপ্রদেশ নিয়ে দফায় দফায় প্রাক্তন মুখমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন অমিত শাহ। তার সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভোপালে ডাকা হয়েছে দলের সব বিধায়কদের।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশে কমলনাথ সরকারের ছয়জন মন্ত্রীসহ ১৭ বিধায়ক ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন বেঙ্গালুরুর হোটেলে। সোমবার দুপুর সাড়ে ৩টা নাগাদ দিল্লি থেকে তিনটি চার্টার বিমানে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিজেপি শাসিত কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে।
প্রথম থেকেই সরু সুতোর উপর ঝুলছে কমলনাথ সরকারের ভাগ্য। ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক ১১৪ জন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে প্রয়োজন ১১৬ জন বিধায়কের সমর্থন। সপা-বসপার বিধায়ক মিলিয়ে ১২১ জন বিধায়কের সমর্থন শাসক কংগ্রেসের পক্ষে। বিজেপির আসন সংখ্যা ১০৭।