প্রবাসের অন্যতম বৃহত্তম সংগঠন সন্দ্বীপ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী আমেজে জমে উঠছে ব্রুকলিনের চার্চ ম্যাকডোনাল্ডস এলাকা। প্রতিদিনই নির্বাচনী কৌশল নির্ধারন ও ভোটের পাল্লা ভারি করতে বৈঠক চলছে। উল্লেখ্য সন্দ্বীপের অধিকাশ প্রবাসীই বাস করেন ব্রুকলিন ও ওজনপার্ক এলাকায়। এই উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ আমেরিকায় বাস করেন। একক উপজেলা হিসেবে প্রবাসীদের সংখ্যা সিলেটের বিয়ানী বাজারের পরই সন্দ্বীপের স্থান। এ নির্বাচনে ইতিমধ্যেই দুটি প্যানেল প্রকাশ্যে লিফলেট ও পোষ্টার বিতরন শুরু করেছ্।ে সোশাল মিডিয়াতেও তাদের রং বেরংয়ের পোষ্টার সয়লাব। একটি প্যানেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতি পদপ্রার্থী কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ, মূলধারার রাজনীতিক ও ফোবানার কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ। ফিরোজ আহমেদ অতীতে সন্দ্বীপ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনারও ছিলেন। তার রানিংমেট হিসেবে সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন আলমগীর হোসাইন।
অপর প্যানেলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমলাক হোসেন ফয়সল। তিনিও সন্দ্বীপ তথা চট্রগ্রাম অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক পরিচিত। তিনি অতীতে সন্দ্বীপ সোসাইটির সাধারন সম্পাদক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব ও সন্দ্বীপ এডুকেশন সোসাইটির সভাপতি হিসেবে কাজ করেছেন। সোসাইটি বর্তমান কমিটির সভাপতি পান্না ও আলাউদ্দীনের আর্শীবাদ রয়েছে তার প্যানেলের ওপর। সভাপতি প্রার্থী ফয়সলের রানিংমেট হিসেবে সাধারন সম্পাদক পদে লড়বেন আমজাদ হোসেন। ২০১৯ সালের পর সন্দ্বীপ সোসাইটির আর কোন নির্বাচন হয়নি। গত দেড় মাস যাবৎ সোসাইটির সদস্য সংগ্রহ ও ভোটার প্রক্রিয়া চলছিল। ১৫ জুলাই ছিল সদস্য হবার শেষ সময়। কিন্তু একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, সন্দ্বীপের বনভোজনের কারনে এ মেয়াদ বাড়ানো হবে। ২৯ জুলাই সোসাইটির বনভোজন। এরপর আরও ২ সপ্তাহ সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। এতে ভোটার সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি হতে পারে। গত ১০ বছর বর্তমান সভাপতি আব্দুল হান্নান পান্না ও ৪ বছর ধরে এস এম আলা উদ্দীন সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন নেতৃত্ব দেখার জন্য সন্দ্বীপবাসী আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছে।
আগামী অক্টোবরে ( ২০২৪-২০২৫) নতুন কার্যকরি কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবার সাথে সাথে গঠিত হবে নির্বাচন কমিশন। সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ ১৯ পদের এ নির্বাচনে টার্মস অব রেফারেন্স ঠিক করবেন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না হতেই ভোট উৎসব শুরু করে দিয়েছেন সন্দ্বীপবাসী। গত বুধবার রাতে এ রিপোর্ট লেখাকালীন সময়েও ফয়সল-আমজাদ প্যানেল নির্বাচনী কৌশল নির্ধারনে সভা করছিলেন। ফিরোজ-আলমগীর পরিষদ প্রতিদিনই গ্রুপ মিটিং ও আঞ্চলিক মিটিং করে চলেছেন। বনভোজনসহ প্রতিটি সামাজিক কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয়। উভয় প্যানেলের নির্বাচনী প্রচারনা নিউইয়র্ক সিটির গন্ডি পেরিয়ে আটলান্টিক সিটিতেও দেখা গেছে। এই নির্বাচনী কৌশলে ফিরোজ আহমেদ ও একমল ফয়সলকে এক টেবিলে বসে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে সম্প্রতি। প্রতিটি নির্বাচনের ন্যায় স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম এবারও আগ্রহী। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। গত নির্বাচনে সভাপতি পদে তিনি ২১ ভোট পেয়েছিলেন।
সভাপতি প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ নির্বাচন প্রশ্নে বলেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। সন্দ্বীপবাসীর মুরুব্বীদের দোয়া নিয়ে গনসংযোগ করছি। সোসাইটির কল্যাণে কি করা যায় তা নিয়ে মতবিনিময় করছি। নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবো নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা করার পর। শুধু এ কথাটি বলতে চাই, দ্বিধাবিভক্ত কমিউনিটি নয়। সন্দ্বীপবাসীর ঐক্য চাই। সন্দ্বীপবাসীর জন্য একটি কমিউনিটি সেন্টার গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন। জনগন আমাকে সুযোগ দিলে তা করবো ইনশাল্লাহ। গণমুখী একটি সংগঠন গড়ে তোলাই হবে আমার লক্ষ্য।
অপর প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এমলাক হোসেন ফয়সল। তার সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। ফয়সলের রানিংমেট সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, নির্বাচনী প্রচারনাটা আগেভাগেই শুরু হয়ে গেল। ১৫ জুলাই ভোটার হবার শেষ তারিখ হলেও ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, ৬ বছর ধরে সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট পান্না ভাইয়ের উৎসাহ ও অনুপ্রেরনায় প্রার্থী হলাম। বিচারের দায়িত্ব ভোটারদের। আপনার প্রতিপক্ষকে কিভাবে দেখছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার প্রতিপক্ষ আলমগীর হোসাইন একবার সিলেকটেড কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সবাই সমাজে কাজ করতে চায়। প্রতিযোগী হিসেবে অবশ্যই স্বাগত জানাই। তার জন্যও শুভ কামনা রইলো।