সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৩৪ শিক্ষার্থীসহ ৩৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে কী কারণে বা কোনো অপরাধে তাদের আটক করা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আটকদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপও নেয়নি তাহিরপুর থানা পুলিশ।
এর আগে রোববার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টায় তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন নতুন বাজার (ডাম্পের বাজার) পাটলাই নদী দিয়ে টেকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে তাদের আটক করা হয়।
বুয়েটের আটকরা হলেন- চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের মান্দারখিল গ্রামের আনোয়ারুল হকের ছেলে বুয়েটের মেটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র আফিফ আনোয়ার (২৪), টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার তক্তারচয়ালা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে বখতিয়ার নাফিস (২৪), মাগুরার আলতাফ হোসেনের ছেলে মো: সাইখ সাদিক (২১), ঢাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে ইসমাইল ইবনে আজাদ (২১), চাঁদপুরের সালেহ আহম্মেদের ছেলে সাব্বির আহম্মেদ (২১), বাগেরহাটের শওকত আলীর ছেলে তাজিমুর রাফি (২০), চট্টগ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে মো: সাদ আদনান অপি (২২), জামালপুরের সেলিম সরকারের ছেলে মো: শামীম আল রাজি (২০), নওগাঁর আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো: আব্দুলাহ আল মুকিত (২৩), শেরপুরের ফজলুল হক শাহিনের ছেলে মো: জায়িম সরকার (২১), ফেনীর মাহবুবুল হকের ছেলে হাইছাম বিন মাহবুব (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাইমুল হকের ছেলে মাহমুদুর হাসান (২২), সাতক্ষীরার ওবায়দুল্লাহর ছেলে খালিদ আম্মার (২১), রাজশাহীর এন্তাজুল হকের ছেলে মো: ফাহাদুল ইসলাম (২৩), রাজশাহীর ওমর ফারুকের ছেলে তানভির আরাফাত ফাহিম (২১), ঢাকার এফ এম আনিছুর রহমানের ছেলে এ টি এম আবরার মুহতাদী (২১), পাবনার মাছুদুর রহমানের ছেলে মো: ফয়সাল হাবিব (২০), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মতিউর রহমানের ছেলে আব্দুল বারি (২৪), খুলনার সিদ্দিক হেলালের ছেলে আনোয়ারুল্লাহ সিদ্দিকী (২৮), বাগেরহাটের সেকান্দার আলীর ছেলে মো: বাকি বিল্লাহ (২৮), কুমিল্লার মিজানুর রহমানের ছেলে মাহাদি হাসান (২৩), নারায়ণগঞ্জের এ এম এম মুছার ছেলে আলী আম্মার মৌয়াজ (২৫), সিরাজগঞ্জের হায়দার আলীর ছেলে টি এম তানভির হোসেন (২৬), ভোলার রফিকুল ইসলামের ছেলে মো: রাশেদ রায়হান (২৪), নোয়াখালীর জামাল উদ্দিনের ছেলে সাকিব শাহরিয়ার (২৩), নীলফামারীর সুলতান আলীর ছেলে ফায়েজ উস সোয়াইব (২৪), নোয়াখালীর মোখলেছুর রহমানের ছেলে আব্দুর রাফি (২৫), চট্টগ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আশ্রাফ আলী (২৫), কুষ্টিয়ার মোসাদ্দেক হোসেনের ছেলে মো: মাহমুদ হাসান (২৫), কুমিল্লার ফজলুল হকের ছেলে মো: এহসানুল হক (২৪), চট্টগ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে মাঈন উদ্দিন (২৪), টাঙ্গাইলের আবু হানিফের ছেলে রাইয়ান আহম্মেদ সাজিদ (১৭), বাগেরহাটের হায়াত আলীর ছেলে তানিমুল ইসলাম (১৫) ও ঢাকার আবেদ আলীর ছেলে মো: আব্দুল্লাহ মিয়া (১৮)।
এদিকে এ খবর জানাজানি হলে জেলা ও উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, তাহিরপুর উপজেলা বাজারের নৌকা ঘাট থেকে রোববার সকাল ৭টায় একটি নৌকায় করে বুয়েটের ৩৪ শিক্ষার্থী টাঙ্গুয়ার হাওরের ঘুরতে যায়। হাওরে ঘোরাঘুরির পর দুপুরে পাটলাই নদী দিয়ে টেকেরঘাট পর্যটন এলাকায় যাওয়ার পথে তাহিরপুরের নতুন বাজারের সামনে নৌকাটি পৌঁছায়। এ সময় পুলিশের দুটি স্পিডবোট পর্যটকবাহী নৌকাটিকে থামিয়ে চালক আহাদুল মিয়া, মুহাদ্দিস মিয়াসহ বুয়েটের ৩৪ শিক্ষার্থীসহ মোট ৩৬ জনকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। তবে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের থানা হেফাজত থেকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তাহিরপুরের নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি শাহিনুর তালুকদার বলেন, রোববার বিকেলে নৌকার দুইজন চালকসহ বুয়েটের ৩৪ শিক্ষার্থীকে আটক করে থানা নিয়ে গেছে। কী কারণে তাদের আটক করা হয়েছে, তা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি থানার ওসি। তিনি বলেছেন, পরে জানাবেন। কিন্তু দিন গিয়ে রাত পেরিয়ে দুপুর হলো এখনো তাদের আটকে রাখা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিক্তিতে নাশকতার অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে পুলিশ স্পষ্ট করে কিছু বলছে না।
এ বিষয়ে জানতে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেনকে ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে সরাসরি কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আটক সবাই বুয়েটের শিক্ষার্থী। বাকি বিষয়ে পরে জানানো হবে।