গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর ড. আবু জাফর মাহমুদ নাইট অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম উপাধি লাভ করেছেন। গত ২৯ জুলাই ভিয়েতনামের ভাং তাও শহরের ইমপেরিয়াল হোটেলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ১০৯৯ সাল (৯’শ ২৪ বছর যাবৎ কার্যকর) থেকে ঐতিহ্যবাহী আনুষ্ঠানিকতায় তাকে ওই উপাধি প্রদান করা হয়। গ্লোবাল কনসরটিয়াম অফ সাইন্স এ- টেকনলজির চেয়ারম্যান গ্রান্ড চ্যাঞ্চেলর, নাইট কমান্ডার প্রফেসর ড. স্যার লক্ষণ মাদুরাসিংহে তাকে নাইট উপাধির শপথবাক্য পাঠ করান। একই সঙ্গে তিনি মর্যাদাপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক সম্মানের আনুষ্ঠানিকতায় নেতৃত্ব দেন। এই আয়োজনে স্যার ড. লক্ষণ মাদুরাসিংহের সঙ্গে ছিলেন প্রফেসর ড. স্যার সুগাথ কটিঙ্কাডুয়া, ড. স্যার মাড্ডুমাগে রোশান এস পেরেরা, ডেম নালানি গুনথুঙ্গা, ডেম রেনুকা গুনথুঙ্গা, নাইট কমান্ডার এশিয়া প্যাসিফিক ড. স্যার ক্লারেন্স কুমারাগে, প্রফেসর ড. স্যার ডেম আসপাসিয়া পেপা, প্রফেসর ড. ডেম হেদার ওয়ারডেল জনসন, ড. স্যার রামানুজন মারথি, প্রফেসর ড. স্যার প্রেমপাল সিংহ, প্রফেসর ড. স্যার ইরানথা ডে মেল, প্রফেসর ড. স্যার এডভিন দেরভিসভিক, প্রফেসর ড. স্যারি রোনাল্ড ইয়াকোবয়, ড. ডেম শিরু উইজেমান্না, ড. ডেম উয়ালাসকি উইজেকুন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দ্য অর্ডার অফ নাইটস অফ দ্য হসপিটাল অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম সাধারণত নাইটস হসপিটালার নামে পরিচিত। এটি একটি সামরিক আদেশ হিসেবে ১২ শতকে জেরুজালেম রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১২৯১ সাল পর্যন্ত সেখানে সদর দফতর ছিল, তারপরে সাইপ্রাসের কোলোসি ক্যাসেল, রোডস দ্বীপ, মাল্টা, এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে স্থানান্তরিত হয়। প্রধানত দাতব্য ও মানবসেবাকে শক্তিশালী করতেই এই হসপিটালাররা ভূমিকা রাখতে থাকেন। অসুস্থ, দরিদ্র বা আহত তীর্থযাত্রীদের যত্ন নেওয়ার জন্য জেরুজালেমে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে মানবসেবা তথা স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘নাইটস অফ সেন্ট জন অফ জেরুজালেম’ উপাধি প্রদান করা হয়। প্রায় হাজার বছরের ইতিহাসে পৃথিবীর বহু মানুষ এই বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ বাল্যবেলা থেকে মানবসেবায় অসামান্য অবদান রেখে আসছেন। তিনি বঙ্গোপসাগর পাড়ের দ্বীপ জনপদ সন্দ্বীপের সন্তান। প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিপন্ন মানুষের পাশেই কেটেছে তার বাল্য ও কৈশোর সময়। তারুণ্যে স্কুল ও কলেজ পড়ার সময়ে প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমের রাজনীতিতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান ছিল অসামান্য। তিনি মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমা-ের কমা-ার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন।
গত ত্রিশ বছর আমেরিকায় বসবাস করছেন ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবসেবা ও মূল ধারার রাজনীতিতে তিনি রেখে চলেছেন অসামান্য অবদান। নিউইয়র্কের বাঙালি সমাজে তিনিই প্রথম ‘হোম কেয়ার’ চালু করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সেবামূলক কার্যক্রমকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে অনন্য ভূমিকা রাখেন। তার হাত ধরেই নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবার বিপুল প্রসার ঘটেছে। এখানে বয়স্ক বাবা মায়েদের সেবা যেমন নিশ্চিত হয়েছে, একইভাবে তৈরি হয়েছে বহু সংখ্যক হোম কেয়ার উদ্যোক্তা ও কর্মীবাহিনী। বহু মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়েছে এই খাতে।
ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ মূলধারার রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা ও অধ্যায়ন করছেন। বিশ্ব নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকার জায়গাগুলো তিনি তার অধ্যায়ন ও চিন্তা দিয়ে আলাদা ব্যঞ্জনায় আবিস্কার করেছেন।
ড. স্যার মাহমুদ এশিয়া প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার প্রান্তিক, দুর্যোগ কবলিত ও বিপন্ন মানুষের সেবায় সবসসময় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। জন্মভূমি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় চালু রয়েছে তার নিয়মিত সেবা ও সহায়তা কার্যক্রম। এসব কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাক্ষরিত গোল্ড মেডেল ও আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। জাতিসংঘের অনুমোদিত একাধিক সংস্থা তাকে প্রদান করেছে গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর ও সম্মানসূচক ডক্টরেট এর মর্যাদা।
এ জাতীয় আরো খবর..