রাঙামাটি কাউখারীতে গত তিন দিন টানা বর্ষণের কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পাহাড়ধসের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি ও মাইকিং করা হচ্ছে।
শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রশাসন ও রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা মাইকিংসহ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত ২৬ টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে ৩৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নূরীয়া বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে ঘাগড়া ইউনিয়ন সকল ওয়ার্ডের, কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল মাঝেরপাড়া, বেতবুনিয়া ইউনিয়ন ও দুর্গম ফটিকছড়ি ইউনিয়নের সকল এলাকায় ঝুঁকিতে থাকাদের নিরাপদে সরতে বলা হয়। নিজেরা সরে না এলে আইন প্রয়োগে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দেয়া হবে।
এরই মধ্য আমরা পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসন পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটিতে ৭৭.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩৭.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছিল ৯৪ মিলিমিটার।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় পাঁচ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের প্রাণহানির ঘটে। এর মধ্যে কাউখালী উপজেলাতে ২১ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই বছর রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একটি অংশ ধসে সপ্তাহব্যাপী সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। ২০১৮ সালে জেলায় নানিয়ারচরে ১২ জুন পাহাড় ধসে মারা যান আরো ১১ জন। এরপরের বছর জেলার কাপ্তাইয়ে মারা গেছেন তিনজন। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত হলেও রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা তৈরি হয়ে থাকে।