শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৭ অপরাহ্ন

চট্টগ্রামে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল সাড়ে ৮ লাখে

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫৬ বার
ছবি : নয়াদিগন্ত

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে আট লাখে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওপর দিয়ে তিন থেকে চার ফুট উঁচু পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অব্যাহতভাবে মহাসড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ঝুঁকি নিয়ে অল্পবিস্তর যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সময় নৌকা উল্টে নিখোঁজ হন আব্দুর রহিম (৪৫), শিশু জান্নাতুল (৪) ও শহিদুল ইসলাম (৩) এবং মোহাম্মদ আরিফের শিশু কন্যা সানজিদা (৪) নামে চারজন নিখোঁজ হয়। সাতকানিয়া উপজেলার চড়তি ইউনিয়নের সুইপুরা যাওয়ার পথে তারা নিখোঁজ হয়। ৯ আগস্ট বিকেলে দূরদুড়ি এলাকায় বিলে নিখোঁজ জান্নাতুলের লাশ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন ইউপি সদস্য নুরুল আমিন।

বুধবার অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃষ্টিপাত কম হলেও নদীর অস্বাভাবিক জোয়ার ও পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছ।

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ মজুমদার বুধবার রাত নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ভারী ও বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সকল জেলায় পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। বুধবার পর্যন্ত এ সংখ্যা দুই লাখ তিন হাজার ৩৭২ পরিবারের আট লাখ ৪৩ হাজার ৫০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। অথচ এর আগের দিন এই সংখ্যা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার ১২ পরিবারের ছয় লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন মানুষ।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫০ টন চাউল, জেলার ১৫টি উপজেলায় ৫৬৫ টন চাউল এবং পটিয়া সাতকানিয়াসহ তিনটি পৌরসভায় ১৫ টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এছাড়া নগদ দেয়া হয়েছে ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। তাছাড়া শুকনো খাবার, ওর স্যালাইন ও পানির বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও সরবরাহ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলা।

এই দুই উপজেলাতেই কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বুধবার বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারি কমিশনার ভূমি জিমরান মোহাম্মদ সায়েক জানিয়েছেন, উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাউল, শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা অব্যাহত রয়েছে।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, উপজেলার পানিবন্দীও ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাউল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা অব্যাহত রয়েছে।

পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল মামুন জানিয়েছেন, পানিবন্দী ও ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চাল, শুকনা খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে বলে কত কাল রাতে জানিয়েছেন।

এদিকে ৮ আগস্ট সকাল থেকে দোহাজারী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন গ্রিড অফিসে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় জেলার সাতকানিয়া লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলা ওই দিন সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে তিন উপজেলার প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মানবতার জীবনযাপন করছে।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পটিয়া-১ সূত্রে জানা গেছে, দোহাজারি গ্রিড অফিস থেকে পানি সরে গেলে পরবর্তী পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রে জানিয়েছেন।

এদিকে গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হাজার হাজার পুকুর মাছের প্রজেক্ট তলিয়ে গেছে। এছাড়া জেলার রোপণ করা আউশ ধান ও বিস্তীর্ণ আগমনের বীজ তলা শাকসবজি ক্ষেত তলিয়ে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com