বাংলাদেশ এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসমুক্ত বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য সতর্কতা বিষয়ে আজ শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, ‘গতকাল করোনাভাইরাস আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির ফলাফলও নেগেটিভ এসেছে। পরবর্তী পরীক্ষা করা হবে ২৪ ঘণ্টা পর। তাই এই মুহূর্তে করোনার উপস্থিতি আছে এ রকম কোনো মানুষ বাংলাদেশে নেই। সুতরাং আমাদের আতঙ্কিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।’
ইতালি থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিমান আজ শনিবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। দুবাই হয়ে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮২ নম্বর ফ্লাইটে তারা ঢাকায় অবতরণ করেন।
ইতালি থেকে দেশে ফেরা এসব যাত্রীর বিষয়ে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘ইতালির রোম থেকে ঢাকায় ফেরা ১৪২ জন বাংলাদেশিকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে কারও শরীরেই করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ইতালির বিভিন্ন জায়গা থেকে দেশে ফেরা ১৪২ জন বর্তমানে হজ ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। তাদের প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বিস্তারির জেনে ও দরকারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে প্রাথমিকভাবে কারও দেহে এ ভাইরাস ধরা না পড়লেও তাদের দুই সপ্তাহের কোয়ারেনটাইনে রাখা হবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের বিষয়ে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন আগেই সেরে উঠেছেন। সর্বশেষ বাকি একজনের নমুনা পরীক্ষা করেও করোনাভাইরাস নেগেটিভ এসেছে। আরেকবার পরীক্ষার পর নেগেটিভ এলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ প্রসঙ্গে সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘স্কুল-কলেজ বন্ধের বিষয়ে আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশে এখনো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সেভাবে নেই। যে তিনজন সংক্রামিত ছিল তাদের পরীক্ষার ফলাফল কিন্তু নেগেটিভ হয়েছে।’
‘তবে আমরা সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে সেলফ কোয়ারেনটাইনে রেখেছি। প্রতিদিন যাদের মধ্যে নতুন উপসহর্গ দেখা দিচ্ছে তাদের নমুনাগুলো সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করছি। পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণে স্কুল-কলেজ বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে’ বলে জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করছি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীসহ সাধারণ জনগণ যারা আছি সবাই সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে আমরা আশা রাখি বাংলাদেশে দ্রুত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে না।’