নিত্যপ্রয়োজনীয় কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিনের খাবারের উপাদান মাছ ডিম সবজি। এই পণ্যেগুলোর দাম কোনোভাবেই নাগালের ভেতরে আনা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই দাম বেড়ে নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। ভোক্তা অধিদফতরের অভিযানে সাময়িকভাবে কমলেও দু’-এক দিনের ব্যবধানে আবারো বেড়ে যাচ্ছে। বাড়তি দামের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্বল্প আয়ের ক্রেতারা।
গতকাল রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। কিছুদিন আগেও এই ডিম বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ডজন। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কয়েক দিনের ব্যবধানে রসুনের দামও কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাস দেড়েক আগেও রসুনের কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। সেটা বাড়তে বাড়তে ২৫০ টাকায় এসেছে। গত দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানেই আমদানি করা রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়। দেশি রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায়ও বেড়েছে। পেঁয়াজ, রসুনের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা। কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়ে ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৫০ থেকে ২৬০ এবং মিয়ানমারের আদা ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমার পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৪ টাকায়। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৩০ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বাজারে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় খোলা চিনি পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাড়ছে আলুর দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটি, বৃষ্টি, পরিবহন সঙ্কটের কারণে আলুর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি। যদিও বাজারে পর্যাপ্ত আলু রয়েছে। উল্টো কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
বাজারে পটল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা আর লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৪৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কাঁচাকলার প্রতি হালি ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, জলি প্রতি পিস ৬০ টাকা, কঁচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়সপ্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ২০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা আর দেশী মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে বাজারে গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায় আর খাসির গোশত প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন শাকের দামও বেড়ে গেছে। প্রতি আঁটি লাল, মুলা, কলমি শাক ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে পুঁই, মিষ্টি কুমড়া, লাউ শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বাজারে কম দামে তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজি ওজনের রুই মাছের দাম ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, দুই-আড়াই কেজি ওজনের দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আর তিন কেজির বেশি ওজনের হলে দাম হাঁকা হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। মাঝারি ও বড় সাইজের কাতল মাছ ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কই মাছ প্রতি কেজি ৩২০ টাকা, পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪৬০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা, রুপ চাঁদা প্রতি কেজি ৮৫০ টাকা, ইলিশ ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি এক হাজার ২০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।