চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল লি শাংফুকে নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে। গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লিকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। আজ শনিবার গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র কর্মকর্তার জনসমক্ষে না আসার এটি সর্বশেষ ঘটনা বলে।
এর আগে চলতি বছরের জুনে দেশটির তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কিন গ্যাংকে প্রায় এক মাস ধরে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এরপর হুট করে চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিন গ্যাংকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে লির ভাগ্যেও কি এমন পরিণতি হতে চলেছে।
জেনারেল লিকে গত ২৯ আগস্ট শেষবার প্রকাশ্যে দেখা যায়। সেইসময় তিনি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয় চীন-আফ্রিকা শান্তি ও নিরাপত্তা ফোরামে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপর থেকে তার আর খোঁজ নেই।
এ নিয়ে মার্কিন একজন শীর্ষ কূটনীতিক চীনের এ বিষয়টিকে আগাথা ক্রিস্টির উপন্যাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জাপানে নিযুক্ত ওই মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাহ ইমানুয়েল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং নিখোঁজ হন, এরপরে রকেট ফোর্সের কমান্ডাররা নিখোঁজ হন এবং এখন লি শাংফুকে জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না।
গুঞ্জন উঠেছে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে সরিয়ে নতুন নিয়োগ দিয়েছেন। এরপর থেকে জেনারেল লি শাংফুকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
শুক্রবার ব্রিটেনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ৬৫ বছর বয়সী লিকে তার দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। এবং তার বিরুদ্ধে দেশটির কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে লির সঙ্গে ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাহ ইমানুয়েল এক্সে আরও লিখেন, লিকে সম্ভবত গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, গত সপ্তাহে লিকে জেরার জন্য জোর করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, লির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে এবং সম্ভবত তাকে তার পদ থেকে সরানো হয়েছে।
তবে এসব নিয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।