ব্রংকস পার্কচেষ্টারের আল আকসা চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট টানতে পারছে না ভোজনবিলাসীদের । কাষ্টমারদের রেটিংও সন্তোষজনক নয়। সন্ধ্যার পর প্রতিদিন রেষ্টুরেন্টে হাতেগোনা কয়েকজন কাষ্টমার দেখা গেলেও সারাদিন বিরানভূমি। শুক্র ও শনিবার কিছু কাষ্টমার দেখা গেলেও উইকডেজের চিত্রটি হতাশাব্যঞ্জক। অথচ পাকচেষ্টারের স্টারলিং এভিনিউ, ইউনিয়ন পোর্ট ও ম্যাক গ্রো এভিনিউস্থ অধিকাংশ রেষ্টুরেন্টই জমজমাট। এমনকি স্টারলিং এভিনিউস্থ আল আকসা রেষ্টুরেন্টে কাষ্টমাররা লাইন ধরে খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করেন। সে অনুপাতে আল আকসা চাইনিজ ফার বিহাইন্ড। অবশ্য এর ম্যানেজার আলী প্রতিষ্ঠানটিকে ট্রাকে তোলার জন্য আপ্রান চেষ্টা করছেন। কাষ্টমারদের সেবা ও আতিথেয়তায় তার ঘাটতি নেই। কিন্তু এখনও আল আকসা চাইনিজ কাষ্টমারদের আস্থার যায়গাটি তৈরি করতে পারেনি। গত শনিবার ৯ সেপ্টেম্বর এই রেষ্টুরেন্টে ডিনার করেছেন মইনুল চৌধুরী। সিলেটের এই ভদ্রলোক স্বপরিবারের খেতে গিয়েছিলেন। প্রতিবেদক তার কাছে নতুন এই রেষ্টুরেন্টের খাবার ও সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় গ্রেড-এ পাবার যোগ্য। আমি পরিবার নিয়ে প্রায়শই উইকেন্ডে বাইরে ডিনার করি। কখনো পার্কচেষ্টার, কখনো জ্যাকসন হাইইটস এমনকি জামাইকাতেও খেতে যাই। নতুন এই রেষ্টুরেন্টে কথা শুনে আমার স্ত্রী ফারজানাসহ খেতে আসি। কিন্তু খাবার মান ও টেস্টে নতুনত্ব কিছু পাই নি। গতানুগতিক। ভবিষ্যতে আবার আসার জন্য আর্কষিত কিছু ছিল না। নতুন কিছু দেখাতে না পারলে কাষ্টমার টানতে তাদের বেগ পেতে হবে।
ব্রংংকসে আল আকসা গ্রুপ সাফল্যের সাথে ব্যবসা করছে। বিশেষ করে আল আকসা গ্রোসারী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এক নম্বর গ্রোসারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মধ্যরাত অবধি কমিউনিটির লোকজন সেখান থেকে বাজার করে। নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিষ পাওয়া যায়। প্রতিদিন গড়ে এই গ্রোসারী স্টোরে প্রায় ৫০ হাজার ডলারের লেনদেন হয়। পার্শবর্তী স্টেট কানেকটিকাট, নিউজার্সি ও আপস্টেট নিউইয়র্ক থেকে লোকজন এসে এই গ্রোসারীতে বাজার করে থাকে। তবে অভিযোগ রয়েছে লেবার ডিপার্টমেন্টের কিছু নিয়ম কানুন মেনে না চলার। স্টেটের লেবার ল’ অনুসারে কর্মচারিদের বেতন প্রদান করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবেক এক কর্মচারি প্রতিবেদকের কাছে এমনই অভিযোগ করেন। লেবার ডিপার্টমেন্টে কোন অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজ ছেড়ে দিয়েছি। ঝামেলার মধ্যে জড়াতে চাইনি। আর মালিকরাতো আমাদের কমিউনিটিরই মানুষ।
আল আকসা চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট চালু করার কথা ছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু করোনার কারনে তা সম্ভব হয়নি। গ্যাসের লাইন নিয়ে ছিল সমস্যা। গত সাড়ে ৩টি বছর রেষ্টুরেন্ট চালু না করেই ভাড়া টানতে হয়। এই রেষ্টুরেন্টটি চালু করতে কর্তৃপক্ষকে বিনিয়োগ করতে হয়েছে ৭ লাখ ডলারের ওপর। এমন বড় বিনিয়োগে রেষ্টুরেন্টটি সাড়া জাগাতে পারছে না। দায়িত্বে রয়েছেন, শেখ আলী। এই চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট কেমন চলছে তা জানতে চাওয়া হয় ম্যানেজার আলীর কাছে। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। নতুন রেষ্টুরেন্ট। অনেকেই জানে না। তবে যে সব কাষ্টমার আসছেন তারা কিন্তু ভালো রিভিউ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, রাতে ব্যবসা ভালো হচ্ছে। আর দিনে এমনিতেই বাংলাদেশিরা বাইরে কম খাবার খেয়ে থাকেন। কাষ্টমারদের আর্কষিত করার জন্য অনলাইনে ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছি। অনলাইনে কাষ্টমারদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের খাবারের মান, কাষ্টমার সার্ভিস ও ব্যবসায়িক সততা দিয়ে আগামীতে আল আকসা চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট ও পার্টি হল জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যাবে। আর এটাতো পার্কচেষ্টারের অন্যান্য গতানুগতিক রেষ্টুরেন্টের মতো নয়।