সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডবে কক্সবাজারে দু’জনের মৃত্যু, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১০৫ বার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উড়ে গেছে গাছপালা ও কাচা ও আধা কাচা ঘরবাড়ি। কক্সবাজার শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ির দেয়াল চাপায় আব্দুল খালেক নামে একজন ব্যবসায়ী এবং মহেশখালীতে অন্য আরেকজন গাছ চাপায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান। এছাড়া দেয়াল চাপা ও গাছপালা পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার পর পরই এটি কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এরপর একটানা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূল ও এর আশপাশের অঞ্চল দিয়ে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় একইসাথে শুরু হয় বজ্র বৃষ্টি।

ঝড়ো হাওয়া আর বাতাসের তীব্র আঘাতে কক্সবাজার শহর ও উপকূল এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং কাচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়। কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরসহ অনেক এলাকায় ঝড়ের আঘাতে গাছ উপড়ে পড়ে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। এতে বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাত ৮টা থেকে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছ পুরো কক্সবাজার শহর।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড় হামুনে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে জেলায় কাচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়া কুতুবদিয়া পাড়াসহ জেলার উপকূল এলাকায় ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

আগামীকাল ঘুর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দেয়া সম্ভব বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানিয়েছেন, ঘুর্ণিঝড় হামুন আজ সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। ঘুর্ণিঝড় হামুন সাগরে গতিপথ পরিবর্তন করে এটি কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূলের দিকে ধাবিত হয়। পরে কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস। ঘুর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্র বৃষ্টি হয়।

তিনি আরো জানান, রাত ১০টার পর থেকে ঘুর্ণিঝড় হামুনে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে তা দুর্বল হয়ে যাবে। তবে এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় কক্সবাজারে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাস জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সৈকতে বিপদ সংকেতের অংশ হিসেবে পর্যটকদের সতর্কতা হিসেবে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া সৈকতে দায়িত্বরত লাইফ গার্ড কর্মীরা পর্যটকদের নিরাপদে থাকতে মাইকিং করছে।
তিনি আরো জানান, কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার ৩০ হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলের নৌযান এবং মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

ঘুর্ণিঝড় হামুনে মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গললবার দুপুরে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা কমিটির সভা করা হয়েছে। উপকূল এলাকায় লোকজনদের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে ইতোমধ্যে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com