জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকা-১৩ আসনের পরপর দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য।
জাহাঙ্গীর কবির নানক ঢাকা-১৩ আসনের পরপর দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে বরিশাল-৫ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সিটি করপোরেশনের সদ্যবিদায়ি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক সেনা সদস্য জাহিদ ফারুক শামীম। তিনিও মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
মনোনয়নপত্র বিতরণের দিন আজ সোমবার নানক এবং গতকাল রবিবার সাদিকের পক্ষে তাঁদের সমর্থকরা তা সংগ্রহ করেন বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার জানিয়েছেন। তিনি জানান, শনিবার সকাল ১০টা থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। সোমবার বিকেলল ৫টা পর্যন্ত বিক্রি হয়। বরিশাল বিভাগের ২১ আসনে ২৪১ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করেছেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানকের জন্ম ১৯৫৪ সালে ১৪ জানুয়ারি বরিশাল শহরে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তিনি। তিনি ২০০৯ ও ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ঢাকা-১৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে নানক মাঠ চষে বেড়াচ্ছিলেন। সেই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছিল।
বরিশালের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর বড় ছেলে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে তিনি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পরে মেয়র হন সাদিকের চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত।
বেশ কিছুদিন ধরেই বরিশাল নগরীতে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে দেখতে চেয়ে পোস্টারিং করা হয়। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের মেয়াদ শেষের মাত্র পাঁচদিন আগে ৯ নভেম্বর তিনি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আগে থেকেই সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি বরিশাল সদরের রাজনীতিতে বেশ জোরেসোরেই চলছিল। গতকাল রবিবার তিনি বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কেনেন। ২০২১ সালের আগস্টে বরিশাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুক শামীমের পোস্টার রাতের বেলায় ছেড়াকে কেন্দ্র করে তৎকালীন ইউএনও মুনিবুর রহমানের সঙ্গে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর দ্বন্দ্ব হয়। ওই সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
সাদিক আব্দুল্লাহর চাচা খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন নিয়ে আসার পর জাহিদ ফারুক শামীমের সমর্থকদের তাঁর পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে। খোকন সেরনিয়াবাত ও জাহিদ ফারুক শামীমকে একসঙ্গে অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে দেখা গেছে। তবে মেয়র খোকন সেরনিয়াতের অভিষেক অনুষ্ঠানে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু কিংবা নানক অংশ নেননি। এই অবস্থার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বরিশাল সদরে কে নৌকার মনোনয়ন পাচ্ছেন তা ভোটারদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা।
তবে এই তিন নেতার বাইরে এই আসন থেকে আরো যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন তাঁরা হলেন এসআর সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মো. সালাহউদ্দিন রিপন, মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম (এসপি মাহবুব), মো. মশিউর রহমান খান, মোহাম্মদ আরিফ হোসেন (আরিফিন মোল্লা), অ্যাডভোকেট মোর্শেদা বেগম, সাইদুর রহমান রিন্টু ও এস এম জাকির হোসেন।
বরিশাল-১ (আগৈলঝাড়া-গৌরনদী) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি এই আসন থেকে বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সাংবাদিকদের কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রির যে তালিকা পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বরিশাল-১ আসনে এখন পর্যন্ত একজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বলরাম পোদ্দার বলেন, এই আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাঁর পক্ষে একটি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আর কেউ মনোনয়নপত্র নেননি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, বরিশাল বিভাগের সবচেয়ে বেশি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে বরিশাল-২ আসনে। উজিরপুর-বানারীপাড়া আসনে এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মোট ১৫ জন।