তামাশার নির্বাচন আয়োজনের প্রতি জনগণের মোটেও ভ্রুক্ষেপ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি নির্বাচনের সমগ্র প্রক্রিয়াকে ‘হাসি-তামাশার নজিরবিহীন হাস্যরসোদ্দীপক নাটিকা’ বলে উল্লেখ করেন।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘জনগণের বিরুদ্ধে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা নির্বাচন কমিশনই সংবিধানের সারবত্তা ভুলুণ্ঠিত করেছে। এখন আওয়ামী ঘরোয়া নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা বলা মানে জনগণের সাথে কমিশনের ঠাট্টা করা। ইউএনও ও ওসিদের বদলির সিদ্ধান্তটিও আওয়ামীমনা ইউএনও-ওসিদের রদবদল মাত্র। সমগ্র প্রক্রিয়াটিই হাসি-তামাশার নজিরবিহীন হাস্যরসোদ্দীপক নাটিকা।’
তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি, আক্রমণ, হামলা, হত্যা ও জখমের এক ভয়ানক সহিংস পরিবেশ বিরাজ করছে। সেখানে নির্বাচন কমিশন কিসের প্রশাসনিক রদবদল করছে? বিএনপি’র নেতাকর্মীরা যখন ঘর ছাড়া, এলাকা ছাড়া, তখন কমিশন পৃথিবীর সর্বযুগের নিকৃষ্টতম নির্বাচনের তামাশার আয়োজনের প্রতি জনগণের মোটেও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যে নির্বাচনে ৬০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে না সেই নির্বাচন নিয়ে এত তোড়জোর করতে কিসের কৃতিত্ব দেখাচ্ছেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাজী হাবিবুল আউয়াল কি জানেন না তার এই তামাশার নির্বাচনকে নিশ্চিত করার জন্য সরকারের হানাদারী আক্রমণে সারাদেশে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী দলগুলোর নেতা-নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে নিরবিচ্ছিন হামলার ঘটনা ঘটছে। আলবদরের মতো এরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘরে লুটপাট করছে। পুরুষশূন্য বাড়িগুলো হামলা চালিয়ে ধ্বংস করছে। বাড়ির নারীদের অপদস্ত করছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক-উদ্বেগ শুধু বিএনপির পরিবারগুলোতেই বিরাজ করছে না, সাধারণ ভোটাররাও অজানা আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে। রাতের আঁধারে মুখোশ কিংবা হেলমেট পরে এসব হামলায় জড়িতরা সরকারি বাহিনী ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডার। ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে বিচার বিভাগকেও যথেচ্ছ ব্যবহার করছে সরকার।’
সারাদেশে হামলা, মামলা ও গ্রেফতারের বিবরণ তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘বগুড়া জেলাধীন শাহজাহানপুর উপজেলার অন্তর্গত খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ফোরকান আলী আজ সকালে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবরোধের মিছিল করার সময় র্যাব ও পুলিশের যৌথ হামলায় পালাতে গিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে সাথে সাথে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ অবস্থায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোঘণা দেন। এই খবর শুনে ফোরকান আলীর মেয়ের জামাই তাকে দেখতে যান। সেখানেই পুলিশ তার মেয়ের জামাইকে গ্রেফতার করে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা এই ধরনের ঘৃণ্য, অমানবিক ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’