তাবলীগ জামাতের একাংশের শীর্ষ নেতা মাওলানা সাদ কান্দলভিকে ধরার জন্য খুঁজছে দিল্লির পুলিশ। গত ২৮ মার্চ থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কান্দলভি ও নিজামুদ্দিন মারকাজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাকে ধরতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে মাওলানা সাদের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। অডিওতে তার অনুসারীদের মসজিদে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে তাবলিগ জামাতের বড় জমায়েত হয়েছিল। সেখানে বহু বিদেশি মেহমান এসেছিলেন। সেখান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে ভারতে।নিজামুদ্দিনের ওই মসজিদে যোগ দেওয়ার পর মোট সাতজন মারা গেছেন। এরই মধ্যে মসজিদটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অডিওতে মাওলানা সাদকে বলেন, তোমরা যদি মনে করো মসজিদে জমায়েত হলে মারা যাবে, তাহলে আমি তোমাদের বলতে চাই, মসজিদে মারা যাওয়ার থেকে আর কোনো ভালো জায়গা নেই।
তাকে আরও বলতে শুনা যায়, আল্লাহ যখন এই রোগ দিয়েছেন, তখন কোনো ডাক্তার বা ওষুধ আমাদের বাঁচাতে পারবে না। ডাক্তার-ওষুধে কিছু হবে না।
এখন সময়, যখন মসজিদগুলো আরও জনবহুল হওয়া উচিত। আমি তাদের জন্য অনুতাপ বোধ করছি, যারা বলে এখন মানুষের মসজিদে যাওয়া উচিত না। মসজিদগুলো ছাড়ার এখনই সময় না। আমরা যদি মসজিদের ভেতরে জড়ো হই তবে আল্লাহ বিশ্বে শান্তি সৃষ্টি করবেন’ যোগ করেন তিনি।
এর আগে ওই জামাত থেকে ফিরে দিল্লিতে ২৪ জন, তেলেঙ্গানায় ৬ জন, আন্দামানে ১০ জন, কাশ্মীরে একজন ও তামিলনাড়ুতে ৫০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই জামাতে ৮২৪ জন বিদেশি ছিলেন। এরই মধ্যে পুলিশ সেই তথ্য সংগ্রহ করেছে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ওই আবেদনে উল্লেখ করে যে, ওই জামাতে উপস্থিতদের মধ্যে ৯৪ জন ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার, ১৩ জন কিরগিস্তানের, ৯ জন বাংলাদেশের, ৮ জন মালয়েশিয়ার, ৭ জন আলজেরিয়ার। এ ছাড়া তিউনিসিয়া, বেলজিয়াম ও ইতালি থেকে একজন করে এসেছিলেন। বাকিরা ছিলেন ভারতীয়।
ওই জামাতে যারা অংশ নিয়েছিলেন তারা শহরের ১৬টি মসজিদে ছিলেন।
এদিকে, গত ৩৬ ঘণ্টায় ওই মারকাজ থেকে ২ হাজার ৩৬১ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৬১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। এখান থেকে বিভিন্ন রাজ্যে গেছেন মানুষজন। ফলে সব রাজ্যকেই কড়া নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে যারা ওই জামাতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন, তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। শিগগিরই কোভিড-১৯ রোগের পরীক্ষা এবং ১৪ দিনের জন্য আবশ্যিক কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হবে তাদের।