বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরের শুরুটা ভালো হলো না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। উদ্বোধনী ম্যাচে বড় হার বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। দুর্দান্ত ঢাকার কাছে ৫ উইকেটে হেরেছে তারা। বিপরীতে আত্মবিশ্বাসী শুরু রাজধানীর দলটির।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিপিএলের দশম আসরের পর্দা উঠে। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও দুর্দান্ত ঢাকা। মিরপুরে টসে হেরে আগে ব্যাট করে কুমিল্লা, যেখানে ৬ উইকেটে ১৪২ রান তুলে তারা। জবাবে ঢাকা জয় নিশ্চিত করে ৩ বল হাতে রেখেই।
শুরুতেই বল ও রানের দূরত্বটা আরো কমিয়ে আনেন নাইম শেখ। শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকা নাইম তুলে নেন অর্ধশতকও। যদিও এরপর ইনিংস আর বড় করতে পারেননি, তবে ঢাকার জয়ের জন্যে যা ছিল যথেষ্ট।
লঙ্কান গুনাথিলাকাকে নিয়ে ইনিংস উদ্বোধন করেন নাইম। পাওয়ার প্লেতে আসে ৫৬ রান। এই যুগলবন্দীতেই ১২ ওভারে স্পর্শ করে তিন অংকের ঘর। ৭৬ বলে ১০১ রান আসার পর ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ৪০ বলে ৫২ রানে ফেরেন নাইম। তানভীরের শিকার তিনি।
শুরুটা দেখেশুনে খেললেও এরপর দারুণ ব্যাট করতে থাকেন গুনাথিলাকা। তবে তাকেও থামান তানভীর, ৪২ বলে ৪১ রান আসে তার ব্যাটে। তিনে নামা ক্রসপুল্লেও ভরসা হতে পারেননি, ফেরেন মোস্তাফিজের বলে ৫ রান করে। ১৭ রানের মাঝে ৩ উইকেট হারায় ঢাকা।
এরপর সাইফ হাসান ৭ রানে ফিরলেও কোনো বিপদ আসতে দেননি ইরফান শুক্কুর। যদিও ম্যাচ জিতিয়ে আসতে পারেননি, তবে তার ১৬ বলে ২৪ রানের ইনিংসটা ঢাকার জয়ে বড় ভূমিকা রাখে। আর ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন ডি সিলভা।
এর আগে উইকেট ধরে রেখেও বড় পুঁজি পায়নি কুমিল্লা। ১৮ ওভার পর্যন্ত ৯ উইকেট হাতে রেখেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ তারা। মাঠে থেকেও সময়ের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি ইমরুল-হৃদয়। বিপরীতে ইনিংসের শেষ তিন বলে তিন উইকেট তুলে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন শরিফুল ইসলাম।
কুমিল্লার হয়ে এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন ইমরুল কায়েস ও অধিনায়ক লিটন দাস। তবে বড় হয়নি তাদের জুটি। লিটন ফেরেন ১৬ বলে ১৩ রানে; চতুরঙ্গা ডি সিলভার বলে ক্যাচ দিয়ে। ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় কুমিল্লা।
এরপর থেকে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ইমরুল। যদিও তিনি ফিরতে পারতেন ২৩ রানেই। আবরারের বলে সহজ ক্যাচ উঠিয়ে দিলেও তা তালুবন্দী করতে পারেননি ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ফলে জীবন পেয়ে তা কাজে লাগাতে ভুলেননি ইমরুল।
আসরের প্রথম ব্যাটার হিসেবে তুলে নেন অর্ধশতক। ৪২ বলে স্পর্শ করেন এই মাইলফলক। তবে বাড়াতে পারেননি রানের গতি। ১৯তম ওভারের শেষ বলে ফেরার আগে ৫৬ বলে করেন ৬৬ রান। একই ওভারে অবশ্য ফিরেন তাওহীদ হৃদয়ও। ভাঙে দু’জনের ৮৭ বলে ১০৭ রানের যুগলবন্দী।
গত আসরে যেখানে থেমেছিলেন, এবার যেন সেখান থেকেই শুরু তাওহীদ হৃদয়ের। দল পাল্টালেও ভূমিকা পাল্টেনি, সেই আগের মতোই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলেন তিনি। তবে পারেননি সময়ের প্রয়োজন মেটাতে। আউট হওয়ার আগে ৪১ বলে মাত্র ৪৭ রান আসে তার ব্যাটে।
১৯ ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৩১ রান। শেষ ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে ১৪০ পাড় করেন খুশদিল শাহ। তবে এরপর টানা তিন বলে ৩ উইকেট তুলে নেন শরিফুল। ফেরান খুশদিল শাহ, রোস্টন চেজ ও মাহিদুল ইসলামকে। বিপিএলের সপ্তম বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি।