পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রার্থীরা প্রাথমিকভাবে এগিয়ে রয়েছেন। তারা দলীয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারায় স্বতন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করে। অত্যধিক দেরির পর ঘোষিত ফলাফলে তাদের এগিয়ে থাকতে দেখা যায়।
এখন পর্যন্ত ঘোষিত ১২টি আসনের মধ্যে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্ররা পাঁচটিতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন চারটিতে এবং বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারির পিপিপি তিনটিতে জয়ী হয়েছে। তবে এটা কোনোভাবেই পুরো নির্বাচনের অবস্থা প্রতিফলন করছে না।
তবে পিটিআই নেতা শাফকাত মাহমুদ বলেছেন, তার দল নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই সারা দেশে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে।
এদিকে নওয়াজের দলের নেতা মরিয়াম আওরঙ্গজেব বলেছেন, ফলাফল বদলে ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জয়ী হচ্ছিলাম, তখন হঠাৎ করে তা বদলে ফেলা হয়।’
উল্লেখ্য,পাকিস্তানে জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের ভোটকেন্দ্রগুলো স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় বন্ধ করে দেয়া হয়। ৯ ঘণ্টা ধরে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলে। এই প্রক্রিয়া মূলত শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে বলা যায়।
ভোট শুরুর ঠিক আগে খুব সকালে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১২৮ মিলিয়ন যোগ্য ভোটারের উদ্দেশে ঘোষণা করে যে ‘নিরাপত্তাগত সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে’ ও ‘আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে” ফোন পরিষেবা ব্যাহত করা হবে।’
নির্বাচনে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (নওয়াজ) পার্টিকে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পছন্দের বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাবন্দি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি বা পিটিআইয়ের ওপর দমনপীড়নের ফলে অনেকেই এই নির্বাচন নিয়ে হতাশ।
ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশজুড়ে মোবাইল পরিষেবা আংশিকভাবে চালু করা হচ্ছে এবং শিগগিরই পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।
ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করায় ব্যাপকভাবে অভিযোগ উঠেছে যে পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকার যাতে ভোটে কারচুপি করতে পারে তাই এমনটা করা হয়েছে। সেই সাথে ইমরান খানের দলের অনুগত প্রার্থীদের জয় থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগও উঠেছে।
জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে থাকা পাকিস্তানের (আনুমানিক জনসংখ্যা ২৪১ মিলিয়ন) হাজার হাজার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে সাড়ে ছয় লাখের বেশি সৈন্য, আধা-সামরিক বাহিনী ও পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করেছিল সে দেশের সরকার।