মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

সব নেতা–কর্মীকে মুক্ত করাই এখন বিএনপির লক্ষ্য

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৪৭ বার

সারা দেশে কারাগারে থাকা সব নেতা–কর্মীকে মুক্ত করাই এখন বিএনপির প্রধান লক্ষ্য বলে দলটির নেতারা বলছেন। অন্যদিকে, এ পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া নেতা-কর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে আসন্ন রমজানে ইফতার অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংবর্ধনার কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে।

দলটির নীতিনির্ধারণী নেতারা মনে করছেন, এর মাধ্যমে দীর্ঘ আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণে হতাশায় পড়া মাঠের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সংগঠিত করা সম্ভব হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারা দেশে ২৪ থেকে ২৫ হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও গ্রেপ্তারের এই সংখ্যা ১২ হাজারের বেশি নয় বলে বিভিন্ন সময় দাবি করেছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। তবে ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘিরে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়, যা চলে নির্বাচন পর্যন্ত।

ভোটের মাসখানেক পর থেকে কারাবন্দী নেতা-কর্মীরা মুক্তি পেতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আব্বাসসহ অনেক নেতা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের তথ্য, এখনো প্রায় চার হাজার নেতা-কর্মী কারাবন্দী আছেন। সব নেতা-কর্মীকে মুক্ত করাই এই মুহূর্তে দলের প্রধান লক্ষ্য।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা আশা করছেন, রমজানের আগে অবশিষ্ট নেতা-কর্মীরা কারামুক্ত হবেন। এর মধ্যে বিগত আন্দোলনের ‘সফলতা-ব্যর্থতার’ পর্যালোচনা হবে। এরপর তাঁরা ধীরে-সুস্থে নতুন কর্মসূচির দিকে যাবেন। কারামুক্তির পর গত সোমবার রাতে স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় অংশ নেন মির্জা ফখরুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ, মির্জা আব্বাসসহ কমিটির সদস্যরা।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী  বলেন, কারামুক্তির পর স্থায়ী কমিটির সভাটি ছিল মূলত সৌজন্য সভা। সেখানে কোনো সাংগঠনিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

তবে সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সভায় কারামুক্ত নেতারা তাঁদের শারীরিক অসুস্থতাসহ কারাগারের অভিজ্ঞতার কথা সহকর্মীদের জানান। সবাই কারামুক্ত নেতাদের প্রতি সহানুভূতি জানান। একপর্যায়ে সারা দেশে মুক্তি পাওয়া নেতা-কর্মীদের সংবর্ধিত করার প্রস্তাব ওঠে। সেই সঙ্গে বিগত আন্দোলনে দায়িত্বশীল নেতাদের গ্রেপ্তারের পর ভারপ্রাপ্তদের চিঠি দিয়ে দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে ‘কৃতজ্ঞতা’ জানানোর কথাও আলোচনায় আসে। অল্প সময়ের মধ্যে কৃতজ্ঞতা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারামুক্ত নেতা-কর্মীদের বিভাগভিত্তিক সংবর্ধনা দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ১০টি বিভাগে সংবর্ধনা সভা হতে পারে। এতে জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেবেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এই মুহূর্তে বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা মাঠের নেতা-কর্মীদের কীভাবে উজ্জীবিত রাখা যায়, তার উপায় খুঁজছেন। সে ক্ষেত্রে কারামুক্তদের সংবর্ধনা কর্মসূচি তার একটি উপায় হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সংবর্ধনা নেতা-কর্মীদের মনোবল জাগাবে। তা ছাড়া এর মাধ্যমে বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা আরেকটি সাংগঠনিক কাজও সেরে ফেলতে চাইছেন। সেটি হলো, কোন বিভাগ বা জেলায় কতজন জেল খেটেছেন, তার একটি তালিকা করা। এই তালিকা ধরে জেল খাটা নেতা-কর্মীদের দলীয় পদ না থাকলে তাঁদের পরবর্তী সময়ে মূল্যায়ন করা।

অবশ্য বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একজন নেতা  বলেন, বিগত আন্দোলনে কারাবন্দী অনেকের দলীয় পদপদবি নেই। তাঁদের সাংগঠনিকভাবে সম্মানিত করা গেলে দল উপকৃত হবে।

অন্যদিকে একে একে কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তিতে প্রাণ ফিরছে বিএনপিতে। বিশেষ করে দলের মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মুক্তির পর ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার’ পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আবার মাঠে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন নেতা-কর্মীরা। যদিও কারামুক্ত নেতাদের অনেকে অসুস্থ। তাঁদের কেউ কেউ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ফলে শিগগিরই বড় কর্মসূচির সম্ভাবনা কম।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com