শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ অপরাহ্ন

শবে বরাত : গুনাহ মাফের ঘোষণা

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৯৬ বার

‘শব’ ফারসি শব্দ। যার অর্থ হলো রাত। আর বরাতও হলো ফারসি ভাষার শব্দ। এর অর্থ মুক্তি।
প্রচলিত অর্থে আমাদের দেশে আরবি মাসের পনেরই শাবান শবে বরাত নামেই প্রসিদ্ধ। যার অর্থ করা হয়, মুক্তির রজনী। যদিও শবে বরাত প্রকৃত অর্থে মুক্তির রজনী কি না, তা নিয়েও আলেমদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। তবে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ এটা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যা সহিহ ইবনে হিব্বান, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদসহ বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।

হ্যাঁ, কেবল ‘শবে বরাতের রাতই’ শুধু তাওবা ইস্তেগফার, নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত ও তাসবিহ তাহলিল পাঠ এবং জিকির-আজকার করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাত, বিষয়টি এমন নয়। তবে এ রাতে আল্লাহ তায়ালা অধিক পরিমাণে বান্দার তাওবা কবুল করে থাকেন। এজন্য আমাদের উচিত হলো, এ রাতকে মহামূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ মনে করে নফল নামাজ ও জিকির-আজকার ও দুআয় মশগুল হওয়া। গুনাহ মাফের জন্য দুআ করা। কারণ, কে না চায় যে, তার মনের আশা প্রত্যাশা কবুল হোক।

হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত। রাসুল সা: বলেছেন- যখন শাবান মাসের অর্ধেক হয়। অর্থাৎ বরাতের রজনী (শবে বরাত) আসে, তখন তোমরা রাতে নামায পড়ো। আর দিনের বেলা রোযা রাখো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা এ রাতে সূর্য ডোবার সাথে সাথে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন- কেউ কি আছে গুনাহ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। কোনো রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেবো। কোনো বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করব। আছে কি এমন, আছে কি এমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। -সূনানে ইবনে মাজাহ।

হজরত সা’লাবা রা. থেকে বর্ণিত- পনেরই শাবান রাতে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টির প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন। মুমিন বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন। কাফিরদেরকে অবকাশ দেন (তাওবা) ক্ষমার জন্য।- বায়হাকি শুয়াবুল ঈমান।

সহিহ ইবনে হিব্বানের বর্ণনায় মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে আরো বর্ণিত হয়েছে- মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত এ রাতে আল্লাহ তায়ালা সবাইকে ক্ষমা করেন।
বায়হাকির বর্ণনায় রাসুল সা: বলেন- এ রাতেই সিদ্ধান্ত হবে, কারা জন্মগ্রহণ করবে এবং কারা কারা মৃত্যুবরণ করবে। বান্দার আমল আল্লাহর কাছে উপস্থিত করা হবে। রিজিক বণ্টন করা হবে।
এ ছাড়াও আল্লাহ তায়ালা শাবানের পনের তারিখ প্রথম আসমানে আসেন- এ রাতে বনি কালব গোত্রের মেষপালকের গায়ে যে পরিমাণ পশম আছে, সে সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ ও জামে তিরমিজি।

তবে শবে বরাত পালনের রাত কেন্দ্রিক কিছু প্রথা পালন থেকে আমাদের বিরত থাকা দরকার। যেসবে মানুষের জন্য সময় নষ্ট ও কষ্ট ছাড়া তেমন কল্যাণ নেই। যেমন ঘটা করে বাসা বাড়িতে বিপুল আয়োজন করে হালুয়া রুটির ব্যবস্থা করা। এমনকি যার ফলে সে রাতে বাসা-বাড়ির নারীরা আর নফল ইবাদত করার সময় পান না। কেবল রুটি হালুয়া তৈরিতেই ক্লান্ত হয়ে ওঠেন। বিভিন্ন প্রকারের আলোকসজ্জা ও আতশবাজির মাধ্যমে অপচয় ও স্বাভাবিক শৃঙ্খলা নষ্ট করে মানুষকে কষ্ট দেয়া। দলবদ্ধভাবে এ রাতে ইবাদত করাকে আবশ্যক মনে করা। বিশেষ নিয়মে, বিশেষ সুরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা। সবাই একত্র হয়ে ইবাদত উৎসব অনুষ্ঠান উদযাপন করা ইত্যাদি।

লেখক :

  • মীযান মুহাম্মাদ হাসান

ইমাম, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com