সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়ার পরিকল্পনা ট্রাম্পের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০
  • ২৭১ বার

কোভিড-১৯ পুরো যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তারমধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের মাসগুলোয় রাজ্যগুলোর অর্থনীতি পুনরায় চালু করার বিষয়ে গভর্নরদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

‘ওপেনিং আপ আমেরিকা এগেইন’ শীর্ষক ওই নির্দেশনায় তিনটি পর্যায়ের রূপরেখা তুলে ধরা রয়েছে, যাতে রাজ্যগুলো ধীরে ধীরে তাদের লকডাউন শিথিল করতে পারে।

ট্রাম্প গভর্নরদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ছয় লাখ ৫৪ হাজার ৩০১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩২ হাজার ১৮৬ জন।

ট্রাম্প পরামর্শ দিয়েছেন কিছু রাজ্য এই মাসে আবারো চালু হতে পারে।

ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প কী বলেছেন?
বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, ‘আমাদের এই যুদ্ধের পরবর্তী পদক্ষেপ হল- আমেরিকা আবার খুলে দেয়া’।

‘আমেরিকা মুক্ত থাকতে চায় এবং আমেরিকানরাও মুক্ত থাকতে চান,’ তিনি বলেন। ‘একটি জাতীয় অবরোধ কোনো দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়।’

তিনি বলেন যে, দীর্ঘায়িত লকডাউনের কারণে জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি মাদকের অপব্যবহার, মদের অপব্যবহার, হৃদরোগ এবং অন্যান্য ‘শারীরিক ও মানসিক’ সমস্যা ‘অনেক বেড়ে যাওয়ার’ বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, সুস্থ নাগরিকরা এমন পরিস্থিতিতে কাজে ফিরতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমেরিকানদের আহ্বান জানানো হবে তারা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন এবং অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকেন।

তিনি বলেন, মার্কিন অর্থনীতির পুনরায় চালু করার কাজ খুব সাবধানে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। তবে তিনি রাজ্য গভর্নরদের ‘খুব তাড়াতাড়ি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন, তারা কী করতে চান তার উপর নির্ভর করে।

এর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার শীর্ষস্থানীয় ডেমোক্র্যাট ন্যান্সি পেলোসি নতুন নির্দেশিকাগুলোকে ‘অস্পষ্ট ও অসঙ্গত’ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেন, এসব নির্দেশনা বিজ্ঞানীদের পরামর্শ উপেক্ষা করার পাশাপাশি দেশজুড়ে দ্রুত করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা চালাতে প্রেসিডেন্ট যে ব্যর্থ হয়েছেন, সেটাকেই ফুটিয়ে তুলেছে।

পরিকল্পনায় কী আছে?
প্রশাসনের ১৮ পৃষ্ঠার দিকনির্দেশনা রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি পুনরায় চালু করার জন্য তিনটি পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিবরণ দেয়া হয়েছে, প্রতিটি পর্যায় কমপক্ষে, ১৪ দিন স্থায়ী হবে।

তিনটি ধাপে কিছু সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব, করোনাভাইরাসের পরীক্ষা এবং কন্টাক্ট ট্রেসিং অর্থাৎ আক্রান্ত কারও সংস্পর্শে কেউ এসেছিলেন কিনা সেটা নিশ্চিত করা।

প্রথম পর্যায়ে, বর্তমান লকডাউন ব্যবস্থার কিছু কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেমন খুব প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ এড়িয়ে যাওয়া এবং ভিড় না করা।

সেখানে বলা হয়েছে যে, রেস্তোরাঁ, উপাসনালয় এবং খেলার মাঠের মতো বড় জায়গাগুলো ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখার মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে।

করোনাভাইরাস পুনরায় দেখা দেয়ার কোনো আশঙ্কা না থাকলে, দ্বিতীয় পর্যায়ের পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। এসময় লোকজন অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ পুনরায় শুরু করতে পারবেন।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে, দ্বিতীয় পর্যায়ে স্কুলগুলো খুলে দেয়া হতে পারে এবং পানশালাগুলো সীমিত আকারে চালু হতে পারে।

তৃতীয় ধাপের অধীনে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কর্মক্ষেত্রে মানুষের যোগাযোগ রাখার বিষয়টিকে অনুমোদন দেয়া হবে।

এছাড়া বয়স্কদের কেয়ার হোম এবং হাসপাতালগুলোয় দর্শনার্থীদের আসা পুনরায় শুরু করা হতে পারে এবং পানশালাগুলো পুরোপুরি চালু হতে পারে।

এক মাসব্যাপী মূল্যায়নের পরে কয়েকটি অঞ্চল খুব শিগগিরই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।

তবে যে জায়গাগুলোতে বেশি সংক্রমণ হয়েছে বা যেখানে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে সেখানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরতে আরো বেশি সময় লাগতে পারে।

হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের কো-অর্ডিনেটর ড. ডেবোরাহ বার্কস বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, রাজ্যগুলো তিনটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে কাজ করেছে, তারা কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে তাদেরকে কাজে ফিরিয়ে নিতে পারবে।

তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপেও মানুষকে কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে যেমন অসুস্থ মানুষ যেন লোকজনের ভিড় এড়িয়ে চলে।

সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com