রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন

অ্যাসাইলাম সিস্টেমের সাথে ভয়াবহ প্রতারণা!

বাংলাদেশ ডেইলি অনলাইন:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ জুন, ২০২৪
  • ৮১ বার

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আসা অনেক অভিবাসী মার্কিন অ্যাসাইলাম সিস্টেমের সাথে ‘প্রতারণা’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্ড্রো মায়োরকাস। সিবিএসের সাথে এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। তার এই মন্তব্যটিতে রিপাবলিকানদের বক্তব্যই প্রতিফলিত হচ্ছে, বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ ধরনের কথা খুব কমই বলেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে হোয়াইট হাউস। এই পরিকল্পনার আওতায় অ্যাসাইলাম অনুরোধ গ্রহণ বন্ধ রাখা হবে এবং দৈনন্দিন সীমার বাইরে কোনো লোক আমেরিকান সীমান্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি হলে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে। তিনি মঙ্গলবারের মধ্যে এ ব্যাপারে নির্বাহী আদেশে সই করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিবিএস নিউজকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি মায়োরকাস বলেন, ‘বাস্তবতা হলো কিছু লোক সিস্টেমটির সাথে প্রতারণা করার চেষ্টা করছে। আমরা যাদের মুখোমুখি হয়েছি, তারা সবাই যে তা করেছে, তা নয়। তবে অনেকেই তা করেছে এবং আমরা সে অনুযায়ী সামাল দিয়েছি।’
দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আমেরিকান যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তার জবাবে মায়োরকাস এই মন্তব্য করেন। গত তিন বছরে এই সীমান্ত দিয়ে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী প্রবেশ করেছে। ফলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য তা ভয়াবহ সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। এমনকি এটি তার নির্বাচনের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আগামী নভেম্বরে তিনি পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রার্থী হয়েছেন।
অনেক বছর ধরেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকানরা অভিযোগ করছে যে অভিবাসীরা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য অ্যাসাইলাম সিস্টেমের সাথে প্রতারণা করছে। তারা বলছেন, যাদের যোগ্যতা নেই, তাদের দ্রুত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার বা ডিপোর্ট করা উচিত।
উল্লেখ্য, মার্কিন অ্যাসাইলাম সিস্টেম সংস্কারে কথা এলে মায়োরকাসের মতো ডেমোক্র্যাটস এবং বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রধানত ক্লেইম প্রক্রিয়া দ্রুত করা, যোগ্যদের দ্রুত অ্যাসাইলাম মঞ্জুর এবং বাকিদের বহিষ্কার বা ডিপোর্টের কথা বলেন।
মার্কিন আইন অনুযায়ী, অভিবাসীরা যদি অবৈধভাবেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে থাকে, তবুও তারা অ্যাসাইলাম পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। তবে আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা জাতীয়তা, বর্ণ, ধর্ম, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বা কোনো সামাজিক গ্রুপের সদস্য হওয়ার কারণে নির্যাতিত হচ্ছেন এবং ওই নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতেই যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় চাচ্ছেন।
মায়োরকাস প্রতারকদের দমনের জন্য তাদেরকে আরো কিছু সহায়তা প্রদানের জন্য সিনেটের আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু রিপাবলিকানরা রাজি না হওয়ায় ওই আইন পাস করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে বাইডেন প্রশাসনের কড়াকড়ি পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অভিবাসীদের প্রবেশ ৫০ ভাগ কমে গেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র-মেস্কিকো সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে হোয়াইট হাউস। এই পরিকল্পনার আওতায় অ্যাসাইলাম অনুরোধ গ্রহণ বন্ধ রাখা হবে এবং দৈনন্দিন সীমার বাইরে কোনো লোক আমেরিকান সীমান্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি হলে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে। তিনি মঙ্গলবারের মধ্যে এ ব্যাপারে নির্বাহী আদেশে সই করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত দুই মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র-মেস্কিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোকজনের প্রবেশ অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ হলো মেক্সিকোর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ। কিন্তু তবুও যুক্তরাষ্ট্রে এটি উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে বহাল রয়েছে। বিশেষ করে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণেই বাইডেন প্রশাসন এ ব্যাপারে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
এই পদক্ষেপের ফলে কংগ্রেসের সাহায্য না নিয়েই বাইডেন প্রশাসন অভিবাসীদের ঢল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তাছাড়া কিছু কিছু বিষয়ে এখনো অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
অপরদিকে মহামারির সময়রকার টাইটেল ৪২ আইনের আওতায় যাদেরকে ডিপোর্ট করা হবে, তাদেরকে আরো সহজে ফেরত যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর নতুন ব্যবস্থায় মেক্সিকো গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস ও এল সালভাডোরের মতো দেশগুলোর অভিবাসীদের ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে।
সাধারণভাবে দক্ষিণ সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীরে, বিশেষ করে পরিবারগুলোকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে মার্কিন আদালতগুলোতে ২০ লাখের বেশি মামলা জমে আছে। অনেককে বছরের পর বছর ধরেও অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমান সময় পর্যন্ত বৈধ বা অবৈধ যেকোনো উপায়ে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারলে যে কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারে। কিন্তু, এখন মার্কিন কর্মকর্তারা অভিবাসীদের আগে থেকেই বৈধভাবে প্রবেশ করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান হারে চাপ দিচ্ছে। প্রয়োজনে কলম্বিয়া, গুয়েতেমালা ও কোস্টারিকার আউটপোস্টগুলো থেকেও আবেদন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com