করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে এবার ঈদের ছুটি হতে পারে ২১ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত। ঈদের আগে পরের দুটি সাপ্তাহিক ছুটির চার দিন, শবে কদরের এক দিন এবং ঈদের পরের দুটি কার্যদিবস মিলিয়ে এবার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হবে।
এ ছাড়া চলমান সাধারণ ছুটি আরও চার দিন বাড়িয়ে ঈদের ছুটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারে। এ হিসাবে ঈদের ছুটির পর ৩১ মে সরকারি-বেসরকারি অফিস চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে এ পর্যন্ত পাঁচ দফা সাধারণ ছুটি
বাড়িয়েছে সরকার। ২৬ মার্চ থেকে চলা এ ছুটি শেষ হওয়ার কথা ১৬ মে। এ ছুটি শেষ হতে চললেও করোনা পরিস্থিতির বরং আরও অবনতি হয়েছে। এদিকে এবার চাঁদ দেখাসাপেক্ষে ২৫ মে উদযাপিত হতে পারে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
১৬ মের পর ঈদের ছুটির আগে কার্যদিবস থাকে মাত্র ৪টি। আর ঈদের পর দুটি কার্যদিবস। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এ সময়ে আর অফিস-আদালত না খোলার পক্ষে সরকার। অর্থাৎ ঈদের ও সাধারণ ছুটি মিলিয়ে ৩০ মে পর্যন্ত সব বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দুয়েকদিনের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সাধারণ ছুটি এবং ঈদের ছুটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছবে। তিনি তাতে সম্মতি দিলে প্রজ্ঞাপন জারি করবে মন্ত্রণালয়।
সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এ বছর সম্ভাব্য ঈদের ছুটি ২৪, ২৫ ও ২৬ মে। এর আগে ২১ মে শবে কদর এবং ২২ ও ২৩ মে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে সাধারণভাবেই ঈদের ছুটি হবে ছয় দিন। এ ছুটির পর কার্যদিবস ২৭ ও ২৮ মে। এর পর ২৯ ও ৩০ মে সাপ্তাহিক ছুটি। আর ঈদের ছুটির আগে সরকারি কার্যদিবস মাত্র ৪টিÑ ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ মে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, এ মাসের শেষ দুই সপ্তাহ দেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি খারাপ হবে। কদিন ধরেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত সোমবার প্রথমবারের মতো ২৪ ঘণ্টায় এক হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। কদিন ধরেই ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হচ্ছে ১০ জনের বেশি করে। এসব বিষয় বিবেচনা নিচ্ছে সরকার। ফলে ঈদের আগে অফিস খোলার পক্ষে নন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রোজা ও ঈদ উপলক্ষে সীমিত পরিসরে হাটবাজার, দোকানপাট, শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধে যাতায়াত করার করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়েছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ফলে হাটবাজার, দোকানপাট ও শপিংমল খোলা না রাখার বিষয়টি সরকারের ভাবনায় রয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। এ বিষয়ে দুয়েকদিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল সন্ধায় আমাদের সময়কে বলেন, সাধারণ ছুটির বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। তবে জানানোর মতো কিছুই এখনো হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলেই আমরা তা চূড়ান্ত করব। প্রধানমন্ত্রী নতুন করে আরও কিছু নির্দেশনা দিতে পারেন। সে জন্য বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
সরকার সীমিত পরিসরে মার্কেট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দিলেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এ প্রসঙ্গে সরকারের পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নলেজে বিষয়টি আছে। তিনি জনস্বাস্থ্যের এ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন।