মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

টাকা দিলে ভিআইপি নয়তো গালাগাল

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০
  • ২১৫ বার

করোনাভাইরাস সংক্রমই ঠেকাতে কাজ করছে সরকার। তাই চলতি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সরকারি ছুটি ছাড়াও সব গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ফল ও নিত্যপণ্য বহনকারী পরিবহন চলাচল করতে পারবে। এ দিকে নানান সমস্যা নিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার ও ট্রাকে চড়ে রাজধানীতে আসছে মানুষ। আবার ঢাকা থেকে সব জেলায় নানা সমস্যা নিয়ে যাচ্ছে মানুষ। তবে ভোগান্তির শেষ নেই বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সূত্র জানায়, ঢাকার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশের লোক। তাদের যাতায়াতের অন্যতম রুট মাওয়া ও মানিকগঞ্জ রোড। ওই দুই রোডে হয়রানির শেষ নেই।

মাওয়া রোড : কুইচ্ছামারা জোড়া ব্রিজ এলাকায় প্রথম ব্রিজে ওঠার আগেই টোল আদায় করা হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে পরিবহন অনুযায়ী টোল। টোল দেয়ার সাথে সাথে চেকপোস্ট বসাইছে পুলিশ। প্রাইভেট কার ও মাইক্রো ছাড়াও বেশি চলাচল করছে ট্রাক। তবে অ্যাম্বুলেন্স চলাচল চোখে পড়ার মতো। ট্রাক ছাড়া সব পরিবহন চেক করছে পুলিশ। প্রথমে গরম দেখানো ছাড়াও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে। পরে সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে পরিবহনগুলো।
বরিশালগামী ট্রাকচালক আলামীন জানান, নয়াবাজার থেকে প্লেনসিট নিয়ে বরিশাল যাচ্ছি। কুইচ্ছামারা ব্রিজ টোল অতিক্রম করার সাথে সাথে গাড়িটা থামায় পুলিশ। কোথায় যাবো, গাড়িতে কী আছে এসব প্রশ্ন করতে থাকে পুলিশ। প্লেনসিটের কথা বলতেই গাড়ি সাইড করতে বলে। পরে দুই হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পাই বলে জানান তিনি। এ ছাড়াও বিভিন্ন ট্রাকের শাওন, সাত্তার, মানিক, বারেক, আলিমসহ একাধিক ট্রাকচালক একই কথা জানান।
শিমুলিয়া চৌরাস্তা মোড় : ওখানে থানা পুলিশ ছাড়াও ট্রাফিক পুলিশ ডিউটি করছে। হাতের বাম পাশে ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যানের দীর্ঘ লাইন। ফেরিঘাটের দিকে যেতে রোডটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

উল্টোপথে ফেরিঘাটে যেতে হয়। এ দিকে শ্রীনগর দিকের রোডের ওপরে শতে শতে প্রাইভেটকার ও মাইক্রো বাস রয়েছে। এক আঙুল দেখালে এক হাজার এবং দুই আঙুল জাগালে ২ হাজার টাকা দিলে যে কোনো পরিবহন ছাড়ছে। তা যদি হয় মাদক কিংবা অবৈধ অস্ত্রবহনকারী গাড়ি।

একাধিক প্রাইভেটকার ও মাইক্রোচালক এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে কাছে ভিড়ছে না পুলিশ। তা ছাড়া তাদের পড়নে থাকছে পিপিই। হাতে থাকা লাঠি ছাড়া চেহারাটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। তাদের সোর্স দিয়ে টাকা উৎকোচ আদায় করছে।

ঢাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত নোহা গাড়িচালক সিরাজ জানান, গত ১৫ মে রাত ১০টা। তার গাড়িতে এক সাংবাদিক পরিবার ছিল। তার মধ্যে একজন প্রসূতি রোগী ছিলেন। শিমুলিয়া মোড়ে পুলিশকে দুই হাজার টাকা দিতে না পারায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে মুন্সীগঞ্জ জেলার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে জানালে ছেড়ে দেয় গাড়ি। শিমুলিয়ায় অবস্থানরত একাধিক প্রাইভেটকার ও মাইক্রো বাসচালক জানান, এক আঙুল দেখালে এক হাজার আর দুই আঙুল দেখালে ২ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। তা না হলে পুলিশ ফেরিঘাটে যেতে দিচ্ছে না বলে কোনো পরিবহন।
এ দিকে মাওয়া ফেরিঘাটে বিআইডব্লিউটিসি ও পুলিশ ফেরিতে কোন গাড়ি আগে এবং পরিবহন পরে উঠবে তা নিয়ে বাণিজ্য করছে। যদি কোনো ট্রাকচালক ১ হাজার টাকা দেয়, তাহলে তার ট্রাকে থাকছে সরকারি মালামাল কিংবা পণ্য। তাছাড়া অন্যসব ট্রাক সাইড করে আগে ফেরিতে উঠাবে ওই ট্রাকটি। এমনভাবে অপরাধে করছে ফেরিঘাটে কর্মরতরা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com