এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সব ওএমএস ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করছে। একইভাবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সব ডিলারের ডিলারশিপ বাতিল করা হচ্ছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ওএমএস কার্যক্রম ২০১০ সালের আগে অনিয়মিত ও স্বল্প পরিমাণে বিতরণ হতো। ২০১০ সাল থেকে এর পরিধি অনেক বেড়েছে।
ঢাকা মহানগরীর ৬ নম্বর অঞ্চলের ওএমএস ডিলার আব্দুল হালিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিলারশিপ পেয়েছি ২০০৭ সালে, যা এখনো সক্রিয়। তবে ডিলারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে ২০১০ সালে ওএমএস কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোয় অনেক ডিলার বাড়ে।
বর্তমানে সারা দেশে ওএমএসের ৯১২টি কেন্দ্রে সপ্তাহে পাঁচ দিন চাল-আটা বিক্রি করা হয়। এসব কেন্দ্রে ডিলার সংখ্যা দুই হাজার ৪২৬। জেলা শহরে ৪৫২ জন এবং মহানগর ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ডিলার রয়েছেন ৪৬০ জন।
পাঁচ বছরের বেশি কেউ ডিলার থাকতে পারবেন না : এবার পাঁচ বছর পর পর ডিলারশিপ পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা সংশোধন করছে সরকার। খসড়া ওএমএস নীতিমালায় বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে চাল-আটা সংগ্রহের জন্য কমপক্ষে তিন দিন ডিলারকে গুদামে উপস্থিত থাকতে হবে। প্রতিবছর ডিলারশিপ নবায়ন করতে হবে।
মহানগর এলাকায় ডিলারশিপ দেওয়া হবে ওএমএস কেন্দ্রের দেড় গুণ। জেলা শহরে দেওয়া হবে কেন্দ্রের ১.৩ শতাংশ। প্রতি উপজেলায় ডিলার থাকবেন তিনজন। আপৎকালে তাঁরা ওএমএস বিতরণ করবেন। অনিয়মের অভিযোগে বিভাগীয় কমিটি ডিলারশিপ বাতিল করতে পারবে। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) তদারকির একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান হোছাইনী কালের কণ্ঠকে বলেন, ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আরো স্বচ্ছ, গতিশীল ও জনবান্ধব করতে নীতিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। সারা দেশে নিয়োজিত ১২ হাজার ৪২৬ জনের ডিলারশিপ চলতি সপ্তাহে বাতিল হতে পারে। পরে ডিলার নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
জানা যায়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর কম মূল্যে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি কার্যক্রম থমকে আছে। এখনো অনেক ডিলার উপস্থিত থাকছেন না বিক্রয়কেন্দ্রে। আবার ডিলারদের মধ্যে যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তাঁদের অনেকে পলাতক। দলীয় লোকজনই বেশির ভাগ কার্ড পেয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ আগস্ট রাজশাহী বিভাগের ২৯ ডিলারের নিয়োগ বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ।
খাদ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) বদরুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ওএমএস-খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার পরিবর্তনের সঙ্গে সুষ্ঠু বিতরণের জন্য মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং বাড়াতে হবে। সব প্রক্রিয়া ডিজিটাল করতে হবে।