বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যেই পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে আজ সোমবার সকালে এক দিনের সফরে তিনি ঢাকায় আসেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই হবে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে এটি হবে বিক্রমের প্রথম বাংলাদেশ সফর।
খসড়া সূচি অনুযায়ী, তিনি পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসার আগে একান্তে বৈঠক করবেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের শীতলতা ও উত্তেজনা কমিয়ে এনে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সে পথ খোঁজা হবে। এ ছাড়া বরাবরের মতো দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর অগ্রগতি ও বর্তমান অবস্থাও পর্যালোচনা হবে।
তবে বৈঠকের এজেন্ডায় শেখ হাসিনাকে ফেরতের ইস্যু না থাকলেও ভারতে বসে তার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য যে দুই দেশের সম্পর্ককে জটিল করছে- ঢাকার তরফ থেকে সেই বিষয়টি জানানো হতে পারে। শেখ হাসিনার সব ধরনের ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারে আদালত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটিও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবকে।
সূত্র আরও জানায়, সোমবারের বৈঠকে দুই দেশের চলমান এই শীতল সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খোঁজা হবে। এ ছাড়া বাণিজ্য, সীমান্ত পরিস্থিতি, নিরাপত্তা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও আঞ্চলিক সংযোগ ইস্যুসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে ভারতের ভিসা সেন্টার পুরোপুরি চালুর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের চার মাসে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দৃশ্যমান উন্নতি কম। ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সম্পর্কে ‘গতিশীলতা’ আসবে বলে আশা করছে সরকার।
এদিকে সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব যোগ দেবেন মধ্যাহ্নভোজে। এরপর তিনি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তবে এখনো সিডিউল মেলেনি দুটি সৌজন্য সাক্ষাতের।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার রাতেই ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির।