শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

‌‘ওরা বলছে হাসিনার বিচার করবে, আমি কী অন্যায় করেছি’

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৭ বার

আমেরিকার পরে এবার ব্রিটেনের এক সভায় ভার্চুয়ালি ভাষণ দিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গতকাল রবিবার দেওয়া ওই ভাষণে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়ী করছেন তিনি।

ভার্চুয়ালি ওই সভায় অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওরা (অন্তর্বর্তী সরকার) বলছে হাসিনার বিচার করবে। কী বিচার করবে? আমি কী অন্যায় করেছি? আমার হাত দিয়ে কোনো খুন হয়নি। আমি মানুষের জীবন নিতে আসিনি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া গণবিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ সামলাচ্ছে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।

ব্রিটেনে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, তিনি কাউকে খুন করেননি। তবে যারা এখন খুন করছেন, তাদের বিচার এক দিন হবে বলেই মন্তব‍্য করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়ে তবে কি ধীরে ধীরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন তিনি?

রবিবার আওয়ামী লীগের সভায় হাসিনা দাবি করেন, বাংলাদেশে এখন ‘অরাজকতা’ চলছে। নাগরিকদের কোনো শান্তি নেই সেখানে। তার কথায়, ‘ঘরে শান্তিতে ঘুমোনোর উপায় নেই। চুরি, ডাকাতি হচ্ছে। যে কোনো সময় তদন্ত হতে পারে। এই তদন্তের নির্দেশ কে দিচ্ছেন?’

বাংলাদেশের মানুষের এখন ‘ন্যায়বিচার’ চাওয়ার অধিকার নেই বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা। ব্রিটেনের সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেই বার বার আঙুল তুলেছেন তিনি। তার কথায়, ‘নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। অথচ এখন বন্যা, ঝড় গেল, কিন্তু তার পরে কেউ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। আজ জনপ্রতিনিধিরা থাকলে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন।’

গত আগস্ট থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হেনস্থা, নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। হাসিনা দাবি করেছেন, সরকারি কর্মীদের এই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে। ‘মিথ্যা মামলা’ থেকে রেহাই দিতে হবে। কাজে ফেরাতে হবে।

বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সময় পুলিশ, সরকারি কর্মীদের মারধর, হত্যা, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের ক্ষমা করেছে। তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘১৫ জুলাইয়ের পর থেকে যারা অপরাধ করেছে তাদের ক্ষমা করা হয়েছে। তার অর্থ, ‘মাস্টারমাইন্ড’ ইউনূস এটাই প্রমাণ করেছেন যে, এরা অপরাধী। যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, আগুন ধরানো হয়েছে, তদন্ত করে তাদের বিচার করতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দোষ থেকে মুক্ত করার অধিকার ইউনূস সরকারের নেই।’’

হাসিনা এ-ও দাবি করেছেন, জনবিক্ষোভের সময় তিনি ‘শক্তি প্রয়োগ’ করেননি। যদি তা করতেন, তা হলে বহু মানুষের প্রাণ যেত। তার কথায়, ‘আমি শক্তি প্রয়োগ করলে লাশ পড়ত। আমি চাইনি মানুষের প্রাণ যাক। পুলিশ রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে।’

এর পরেই নোবেলজয়ী ইউনূসের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। তার কথায়, ‘ইউনূস মাস্টারমাইন্ড, খুনি, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী। আবু সাঈদের হত্যার জন্য এই মাস্টারমাইন্ডরাই দায়ী। তারা চেয়েছিলেন, লাশ ফেল, তা হলে সরকার পড়ে যাবে।’

জনপ্রতিনিধি হিসেবে ক্ষমতা হস্তান্তরের সুযোগও পাননি বলে জানান শেখ হাসিনা। তার কথায়, ‘একজন জনপ্রতিনিধি অপর এক জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে। আমি তো সেই সুযোগ পাইনি।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়েও ইউনূস সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন হাসিনা। তার দাবি,‘শেয়ার মার্কেটে লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। কোথায় গেছে? ব্যাংক বসে যাচ্ছে। কেন অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর লুট হয়েছে। মন্দির, গির্জা ধ্বংস করা হয়েছে।’ তবে এই অন্ধকার শিগগিরই কেটে গিয়ে নতুন সূর্য উদিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com