মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিপর্যস্ত গোটা যুক্তরাষ্ট্র। এই ভাইরাসে প্রতিনিয়ত দেশটিতে আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোতেই তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে দেশটি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
পরিসংখ্যান সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারে তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৫৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ২৫ হাজার ২৭৫ জন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬৯ জন।
আক্রান্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। এরপরই পর্যায়ক্রমে রয়েছে রাশিয়া, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও ফ্রান্স। আর মৃত্যুর দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানেই রয়েছে যুক্তরাজ্য। এরপরই পর্যায়ক্রমে রয়েছে ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রাজিল।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সেখানে কোভিড-১৯ রোগে অন্তত ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা বিস্তারের পর শহরটিতে এখন একদিনে এটাই সবচেয়ে কম সংখ্যক মৃত্যু। এই অদ্ভূত বাস্তবতার মধ্যে এটাই ভালো খবর বলে জানান তিনি।
আগে থেকেই ১ জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় ধাপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে তা প্রথম ধাপের চেয়েও মারাত্মক হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের এই পরিচালক বলেন, নতুন করে প্রাদুর্ভাব হলে তার সঙ্গে যুক্ত হবে মৌসুমী ফ্লু। সে ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর অকল্পনীয় চাপ তৈরি করবে।
‘বর্তমানে আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার চেয়েও আগামী শীতে এই ভাইরাসটির আঘাত বিপজ্জনক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’ বলে জানান রবার্ট রেডফিল্ড। পাশাপাশি একটি ফ্লু ও একটি করোনাভাইরাসের মহামারির জন্য প্রস্তুত হতে মার্কিন কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮৩ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে।
চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।