ইতোমধ্যে এশিয়া ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমা অব্যাহত থাকায় স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদের দেশেও সাধারণ ছুটি আর বাড়ছে না। আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে অফিসে কাজ চলবে। তবে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তার আগ পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকবে।
সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনও চালু হবে। ফলে বিভিন্ন জেলায় পরিবহনে যাত্রীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করতে পারবেন। রাত আটটা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের মতো চলাচল সীমিত থাকবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা হলো, আমাদের দেশে যখন আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এ পর্যায়ে এসে সব সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে গণপরিবহনে কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব সেটাও একটা প্রশ্নের বিষয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন মাসে যদি বাংলাদেশে লকডাউন তুলে দেওয়া হয় তবে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে। দুই মাস ধরে বিভিন্ন মেয়াদে লকডাউন পালিত হওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যার এই ঊর্ধ্বগতি খুব বেশি ভয়াবহ হবে না এমনটাই আশা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং রোগতত্ত্ববিদরা।
ধারণা করা হচ্ছে, যেহেতু মানুষের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার একটি ভীতি কাজ করবে তাই লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও সাধারণ জনগণ করোনা প্রতিরোধের সামাজিক বিধিনিষেধগুলো মেনে চলা অব্যাহত রাখবে। মনে করা হচ্ছে, বেশ কিছুদিন ধরে এই আচরণগুলো মেনে চলার কারণে তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। যেমন মানুষ নিজের নিরাপত্তার কারণেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবে, মাস্ক ব্যবহার করবে যার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছলেও চূড়াটি খুব বেশি উঁচু হবে না। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ‘স্বাস্থ্য নাকি অর্থনীতি’ এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়া যেহেতু কঠিন, তাই জীবন-জীবিকার স্বার্থে আমাদের মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সরকারকেও এদিকে নজর দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।