মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

ঘরে বসেই পরীক্ষা দেবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৬ জুন, ২০২০
  • ২৮২ বার

দীর্ঘ ছুটিতে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা অব্যাহত রাখতে এবার ঘরে বসেই পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। ইতোমধ্যে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা ডিপিইর এমন সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন। তারা করোনা আতঙ্কে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি যেতে রাজি হচ্ছেন না। অনেকে লিখিত এবং মৌখিকভাবে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে এবার শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি পাঠানোর কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকরা লেখাপড়ার খোঁজ নেবেন।

পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনে পাঠদানের আলোকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ওপর প্রশ্নপত্র দিয়ে আসবেন। ছাত্রছাত্রীরা নিজের খাতায় উত্তর লিখে রাখবেন। পরে শিক্ষকরা তা সংগ্রহ করে মূল্যায়ন করবেন। যদিও এই উদ্যোগে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকসমাজের সভাপতি আনিছুর রহমান গতকাল শুক্রবার নয়া দিগন্তকে জানান, দেশের অনেক শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক স্থানে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এই অবস্থায় শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কাজে আগ্রহী হবেন না। অনেক শিক্ষক টেলিফোনে এ বিষয়ে মৌখিক আপত্তি জানিয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষকরা তো সব শিক্ষার্থীর বাড়িও চেনেন না। তারা কিভাবে সবার বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেয়ার মতো এত বড় একটি কাজ সমাধান করবেন। কাজেই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনারও দাবি জানান তিনি।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষকরা টেলিফোনে জানিয়েছেন, করোনার এই মহা দুর্যোগের সময়টিতে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তবে কোনো কোনো শিক্ষক বলছেন, উদ্যোগটি ভালো। এতে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় ফিরে আসার পাশাপাশি মানসিকভাবেও চাঙ্গা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক মোহাম্মদ ফসিউল্লাহ এ বিষয়ে জানান, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের বিকল্প প্রক্রিয়ায় পাঠদান চলছে। এখন আমরা সেই পাঠদানের ওপর মূল্যায়ন করতে চাই। তাই বিকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ আছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ওই মাসের শেষের দিকে অর্থাৎ ২৬ মার্চ থেকে শিক্ষার্থীদের টেলিভিশন পাঠদান শুরু হয়। পরে বেতারে পাঠদান প্রক্রিয়া শুরু করতে এগিয়ে আসে ইউনেস্কো। এ নিয়ে সংস্থাটির তত্ত্বাবধানে কাজ চলছে। এরই মধ্যে মোবাইল ফোন হটলাইনে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের পরামর্শ সেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর-৩৩৩৬ এ ফোন করে ভালোমানের শিক্ষকদের কাছ থেকে শ্রেণিপাঠ ও পরামর্শ নিতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এতে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত বিনা খরচে কথা বলা যাবে। উদ্যোগটি সফল হলে তা কোচিং সেন্টারের বিকল্প হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের সম্মিলিত উদ্যোগে এ কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে অন্তত ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের কাছে শিক্ষা পরামর্শ ও শ্রেণিপাঠ পৌঁছানো সম্ভব হবে। এ কারণেই এই হেল্পলাইন চালুর উদ্যোগ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com