রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

আনলক-১-এর প্রথম দিনে কলকাতায় অফিস যাবার তাড়াহুড়ো

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০
  • ২২৬ বার

লকডাউন শিথিল হয়েছে ১ জুন থেকে। তবে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে আনলক-১-এর দুয়ার খোলা। আর এদিনই সরকারি, বেসরকারি অফিস খুলে গিয়েছে। দোকান, বাজার, ধর্মস্থান আগেই খুলেছিল। সোমবার থেকে খুলেছে শপিং মল, হোটেল, রেস্তোঁরা। খুলেছে কিছু পর্যটন কেন্দ্রও। লকডাউন এখন এসে ঠেকেছে সংক্রমিত ব্যক্তির বাড়ি বা আবাসনে। বাকী সর্বত্র অবাধ যাতায়াতের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে।

আর এই সুযোগ পেয়ে দম বন্ধ অবস্থা থেকে ছুটে বেরিয়ে এসেছেন অনেকে। সামাজিক দূরত্ব বিধিকে লাটে তুলে পথেঘাটে দোকান-বাজারে মানুষ স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে। তবে সোমবার সকাল থেকে কলকাতামুখী মানুষের ¯্রােত ছিল অফিসে সময়মত হাজিরার জন্য। অনেকদিন ঘরে বসে থাকতে হয়েছে। অনেকে বেতন পেয়েছেন, অনেকে পান নি। এই অবস্থায় দূর দূর থেকে নানা পরিবহনের সাহায্যে অফিসে পৌঁছেছেন মানুষ। তবে এদিন এক সঙ্গে আগের মত অনেক মানুষ পথে নামায় পরিবহন সঙ্কটে পড়তে হয়েছে অনেককে। প্রয়োজনের তুলনায় বাস ছিল অনেক কম। ফলে দুর্ভোগ ভোগ করতে হয়েছে বাসে ওঠার ক্ষেত্রে। সামাজিক দূরত্বকে হেলায় ঠেলে দিয়ে একে অন্যের পাশ দিয়ে মাথা গলিয়ে বাসে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন। করোনার সংক্রমণ নয়, সকলের একটাই লক্ষ্য ছিল অফিসে যাওয়া। সরকারি ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা থাকলেও বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরিটা এখনো রয়েছে কিনা সেই দুশ্চিন্তা নিয়েই মানুষ সময়মত হাজির হবার চেষ্টা করেছেন কর্মস্থলে। ফলে বহুদিন পরে কলকাতায় দেখা গিয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। হকাররাও স্বস্থানে ফিরে এসেছে। যদিও ক্রেতাদের দেখা পাওয়া যায় নি। একই ভাবে শপিংমলগুলি খোলা হলেও সেগুলি আগে যেখানে তরুন-তরুণীদের কলকাকলিতে ভরপুর থাকতো তারাও সাহস করে খুব একটা আসেন নি। অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে। অর্ধেকের বেশি মানুষ প্রবেশ করতে পারবেন না। মাস্ক পরা থাকতেই হবে। আর প্রতি পদে পদে দূরত্ববিধি মেনে চলার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। এই রকম কড়াকড়ির মধ্যে শপিং মলে আসার কোনও মানে হয়না বলে জানালেন সাউথ সিটি মলে আসা রঞ্জিতা, মিমি, শাকিলারা। এদিকে হোটেল রেস্তোঁরাতেও এদিন আনাগোনা ছিল খুবই কম। খাবার বসে খাওয়ার চেয়ে নিয়ে যাবার সংখ্যা ছিল বেশি। আর রেস্তোঁরাগুলিকে নতুন করে দূরত্ববিধি মেনে সাজানো হয়েছে। পার্ক স্ট্রীটের এক অফিসকর্মী অভিষেক রায় জানালেন, দু’মাসে আমি রেস্তোঁরা থেকে কয়েকবার খাবার অর্ডার দিয়েছি। কিন্তু সেখানে যেতে সাহস জোগাড়ে আরও সময় লাগবে আমার। তবে অফিসপাড়াতে ফুটপাথের ফাস্টফুডের দোকানে এদিন ভালোই ভিড় দেখা গিয়েছে। অবশ্য সকলের হাভভাবে ছিল সতর্কতা। স্কুল কলেজ না খুললেও এদিন থেকেই স্কুলে ও কলেজে প্রশাসনিক কাজের জন্য অধ্যাপক ও শিক্ষকদের হাজিরা দিতে হয়েছে। ধর্মস্থানগুলিও এদিন থেকে পুরোদমে খুলে গিয়েছে। কয়েকটি বড় ধর্মস্থান অবশ্য আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে। সেখানেও অনেক বিধিনিষেধ। দেবদেবীর মূর্তিতে হাত দেওয়া যাবে না, সিঁদুর বা শান্তিজল নৈব নৈব চ। একসঙ্গে ১০ জনের বেশি প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি কোথাও। এদিন কলকাতায় মানুষকে অন্য চেহারায় দেখা গিয়েছে। অধিকাংশই মুখে মাস্ক লাগিয়েছেন। অনেকের হাতে দেখা গিয়েছে গ্লাভস। আর অধিকাংশই সুযোগ পেলেই স্যানিটাইজারে দু’হাত ঘষে নিচ্ছেন। আসলে এটাই হতে চলেছে এখন আমাদের নতুন জীবন ধারা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com