নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের মুখেও মিয়ানমারে থেকে যাওয়া প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান মারজুক দারুসম্যান। তিনি বলেছেন, অব্যাহত বৈষম্য ও বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়া, চলাচলের নিষেধাজ্ঞা, নিরাপত্তাহীনতা এবং ভূমি, চাকরি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। গতকাল জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে দারুসম্যান এ সব কথা জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা অব্যাহত রাখতে রাষ্ট্রের ইচ্ছার শক্তিশালী আলামত পাওয়া যাচ্ছে। আবারো গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে রাখাইন। আন্তর্জাতিক সনদের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী গণহত্যা প্রতিরোধ, তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে কার্যকর আইন প্রণয়নে মিয়ানমার ব্যর্থ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটরের মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রতিনিধি হিসেবে গাম্বিয়ার উদ্যোগকে সমর্থন দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান।
মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি বলেন, মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর ওপর বৈষম্য সমানতালে চলছে। রাখাইনের অনেক অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের প্রবেশাধিকার নেই। ২৭টি গ্রাম নিজেদের ‘মুসলিমমুক্ত’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বলে আমার কাছে তথ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন দায় মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে পারবে না। গত ১৫ মাসে এই কমিশন একটি প্রতিবেদনও দিতে পারেনি।
জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনকে মিয়ানমার স্বীকার করে না উল্লেখ করে বিশ্বসংস্থায় দেশটির রাষ্ট্রদূত হুয়া ডু সুয়ান বলেন, এই মিশনের দৃষ্টিভঙ্গি একপেশে, যা ভ্রান্ত তথ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। রাষ্ট্রদূত রাখাইনের হিন্দুসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের পরিস্থিতির প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের জন্য মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, জবাবদিহিতার নামে অন্যায্য ও অনাকাক্সিক্ষত রাজনৈতিক চাপ মিয়ানমার সহ্য করবে না।