আগামী ২৩ জুন নিউইয়র্কে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের বাছাই পর্বের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সব স্টেটের মধ্যে নিউইয়র্কেই বাংলাদেশিদের বসবাস সবচেয়ে বেশি। কয়েক বছর ধরেই নিউইয়র্কের বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি মূলধারার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ জয়লাভ করতে পারেননি। তবে অন্যান্য স্টেটে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জয়লাভ করেছেন।
এবার নিউইয়র্ক থেকে ১০ জন বাংলাদেশি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। কংগ্রেসম্যান পদ থেকে শুরু করে ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে নির্বাচন করছেন। এর আগে নিউইয়র্ক থেকে এত সংখ্যক বাংলাদেশি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি এবং নতুন প্রজন্মের এত প্রার্থীও দেখা যায়নি।
এবার যারা নির্বাচন করছেন তারা হলেন- কংগ্রেসওম্যান পদে কমিউনিটির পরিচিত মুখ বদরুন নাহার খান মিতা। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আলোচিত কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিওর বিরুদ্ধে নির্বাচন করছেন। তিনি ডিস্ট্রিক্ট-১৪ থেকে নির্বাচন করছেন। ইতিমধ্যেই তিনি আলোচনায় এসেছেন। নিউইয়র্কের আসন-৫ থেকে কংগ্রেসম্যান পদে নির্বাচন করছেন সানিয়াত চৌধুরী।
স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান পদে ২৪ ডিস্ট্রিক্ট পদে নির্বাচন করছেন মাহফুজুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট ৩৪ আসন থেকে অ্যাসেম্বলিম্যান পদে নির্বাচন করছেন জয় চৌধুরী, ডিস্ট্রিক্ট ৩৭ থেকে অ্যাসেম্বলীওম্যান পদে নির্বাচন করছেন মেরি জুবায়েদা, স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান পদে ডিস্ট্রিক্ট ৩৬ থেকে নির্বাচন করছেন জোহরান কাওমামী মামদানী, ব্রুকলীন থেকে নির্বাচন করছেন সাহানা হানিফ, ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে (২৪এ) আসনে নির্বাচন করছেন মাহতাব খান, এই আসনে বাংলাদেশি মৌমিতা আহমেদও নির্বাচন করছেন। ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে ৮৭ আসন থেকে নির্বাচন করছেন বাংলাদেশি কমিউনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ এন মজুমদার ও নাফিস আই চৌধুরী।
বদরুল খান মিতা, সানিয়াত চৌধুরী, মাহফুজুল, জয় চৌধুরী, মেরি জুবাইয়দা, জোহরান, সাহানা হানিফ, মাহতাব খান, এন মজুমদার ও মৌনিতা জয়ী হলে বিজয় হবে বাংলাদেশের। বিজয়ী হবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সকল প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস, ম্যানহাটন সবখানে বাংলাদেশিরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। ২৩ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে পরিচিতি সভা। গত ১৫ জুন বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালানো হয়েছে প্রার্থীদের পক্ষে, অনেকে আগাম ভোট দিয়েছেন। শুধু বাংলাদেশি নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভোটারসহ বিভিন্ন দেশের ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করা হচ্ছে।
গত ১৪ জুন সানরাইজ মুভমেন্ট নামের একটি সংগঠন নির্বাচনী প্রচারণামূলক কার্যক্রমে অংশ নেয়। এ ছাড়া ফোন ব্যাংকিং চলছে বলে জানান প্রার্থীরা।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গণপরিবহনের সমস্যা, ড্রাইভিং পরীক্ষায় বাংলা ভাষায় পরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, স্কুলে হালাল ফুড সরবরাহ, আবাসন সমস্যা, স্কুলে ভর্তি সমস্যাসহ বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তারা কথা বলবেন।
তারা আরও বলেন, ‘আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এতদিন আমরা অন্য কমিউনিটির প্রার্থীদের নির্বাচন করেছিলাম, তাদের জয়যুক্ত করেছিলাম। এখন সময় এসেছে আমাদের নির্বাচন করার। কারণ তারা নির্বাচনের সময় আমাদের কমিউনিটিতে আসেন, ফান্ড রেইজিং করেন এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর আর তাদের পাওয়া যায় না। আমরা নির্বাচনে দাঁড়ালে তারা আমাদের সমর্থন করে না, তারা তাদের কমিউনিটির প্রার্থীদের সমর্থন করেন। দুঃখজনক বিষয় হলো- তারা আমাদের সমর্থন তো করেন না, উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেন।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা বলেন, ‘আমাদের শুরু করতে হবে, আর সেই কাজটি আমরা শুরু করেছি। তবে আশার কথা হচ্ছে- এবার নতুন প্রজন্মের অনেক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।’
পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে অডিটর জেনারেল পদে বিজয়ী নীনা আহমেদ নিউইয়র্কে এবার বাংলাদেশিদের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।