বাংলাদেশে করোনার পিক সময় এখনো আসেনি বলে মত দিয়েছে ঢাকা সফরত চীনের মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞ দলটি। একই সঙ্গে তারা মনে করেন বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। গতকাল ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সঙ্গে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় চীনের বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন। বিশেষজ্ঞ দলের পক্ষে কথা বলেন ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন ইয়ান হুয়ালং। অংশ নেন বিশেষজ্ঞ দলের ডা. শুমিং শিয়ানউ ও ডা. লিউহাইট্যাং।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহযোগিতা দিতে এ মাসের ৮ জুন ঢাকা আসে ১৪ সদস্যের চীনা মেডিক্যাল দল। প্রায় দুই সপ্তাহে ঘুরে দেখেন ঢাকার সব করোনা হাসপাতাল। কথা বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে।
ঢাকার চীনের দূতাবাস ও কূটনীতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের যৌথ আয়োজনে অনলাইন মতবিনিময় সভায় নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে মেডিক্যাল দলটি। তাদের মত, করোনা মোকাবিলায় লকডাউন একটি উপায় হতে পারে একমাত্র নয়। দলটির বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের সঙ্গে সঙ্গে দরকার এন্টিজেন নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ প্রতিরোধ। তাদের মূল্যায়নে, বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই দুর্বল।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন চারটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে চীনের মেডিক্যাল দল। এক সপ্তাহের মধ্যেই যা দেওয়া হবে সরকারকে। আর আজ সোমবার ঢাকা ছাড়ার আগে বিস্তারিত জানাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে হতাশ সফররত চীনের বিশেষজ্ঞ দল। ইয়ান হুয়ালং বলেন, এ দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার খুবই অভাব। এটা দেখে বিশেষজ্ঞ দল ভীষণ হতাশ। তবে চিকিৎসকসহ চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যাও খুবই কম। তবু স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে তারা অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন বলে মনে করে বিশেষজ্ঞ দল।
করোনা পরিস্থিতির স্থায়িত্বকাল নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে (পিক টাইম) পৌঁছেনি, কবে পৌঁছাবে তাও বলা কঠিন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবশ্যই পরিকল্পিত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে লকডাউন করতে হবে। এই পরিস্থিতি আরও ২-৩ বছর চলবে কি-না সেটা বলার মতো বৈজ্ঞানিক তথ্য বিশেষজ্ঞদের জানা নেই। ইয়ান হুয়ালং আরও বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখেছেন এই বিশেষজ্ঞরা। তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। করোনা শনাক্তে র্যাপিড ডট কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা সমর্থন করেন না চীনা বিশেষজ্ঞরা।