বিশ্বব্যাপী এক কোটির বেশি লোককে আক্রান্ত করে এবং লাখ লাখ লোকের প্রাণ কেড়ে নিয়েও দমে যায়নি করোনা ভাইরাস; বরং সংক্রমণের দিক থেকে সেটি আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সংক্রমণ ক্ষমতা বাড়লেও মানবদেহে ক্ষতি করার সক্ষমতা আগের মতোই রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য বলা হয়েছে।
ভাইরাসটি মিউটেশনের মাধ্যমে দ্রুত নিজের চরিত্র বদল করছে- এমন তথ্য আগেই জানিয়েছেন গবেষকরা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ফেইনবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এজোন ওজের স্থানীয় রোগীর শরীর থেকে নেওয়া ভাইরাসের জেনেটিক কাঠামো পরীক্ষা করে ভিন্নতা পেয়েছেন। এমন চারটি গবেষণার সূত্রে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, জিনগত এই রূপান্তরের ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা বেড়েছে।
গবেষণা অনুযায়ী, সংক্রমণের ক্ষমতা বাড়লেও এই ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে আরও বেশি ক্ষতি করার মতো সক্ষমতা অর্জন করেনি করোনা। বিজ্ঞানীরা তাই জোর দিচ্ছেন ভাইরাসের মূল জিনোমের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে। যেন রূপান্তরিত জিনোমের ক্ষেত্রেও সেই ভ্যাকসিন কাজ করে। গবেষকদের দাবি, করোনা ভাইরাসের
জেনেটিক পরিবর্তনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্পাইক প্রোটিনের ওপর প্রভাব পড়া। এ স্পাইক প্রোটিন হলো ভাইরাসের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।
চীনের উহানে যখন ভাইরাসটি প্রথম ছড়ায়, তখন সার্স কভ-২ নামক করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন আগে থেকেই কার্যকর ছিল। সার্স কভ-২ এর স্পাইক প্রোটিনের দুইটি অংশ আছে। স্ক্রিপস রিসার্সের ভাইরোলজিস্ট হায়েরিয়ুন চোয়ে বলেন, চীনে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের যে সংস্করণ দেখা গিয়েছিল, তা প্রায়ই ভেঙে পড়তো। একটি প্রক্সি ভাইরাস ব্যবহার করে এর জিনের দুই ধরনের সংস্করণ নিয়েই গবেষণা করেন বিজ্ঞানীরা। এতে দেখা গেছেÑ জি ভ্যারিয়েন্ট সমৃদ্ধ ভাইরাসগুলোতে অনেক বেশি স্পাইক প্রোটিন আছে। আর এদের স্পাইক প্রোটিনের বাইরের অংশ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এর মধ্য দিয়ে ভাইরাসটি ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হয়ে পড়ে।