শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

চার কারণে বাড়ছে চালের দাম

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০২০
  • ২১০ বার

ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের দাম। খোদ জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত ২২, ২৩ ও ২৪ জুন রাজধানীর বাজার মনিটরিং করেছে। তাদের বাজার তদারকিতেই উঠে এসেছে সম্প্রতি প্রতিকেজি চালের মূল্য ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে চালের মূল্য বৃদ্ধি চার কারণে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বাজার স্থিতিশীল করতে মিলমালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে বাণিজ্য সচিবের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা। খবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চার কারণে চালের মূল্য বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑ করোনাকালীন গরিব ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে ব্যাপক পরিমাণে চাল কেনায় বাজারে চাহিদা বেড়েছে। ফলে বেড়েছে দাম। করোনার প্রভাবে পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বর্ধিত ব্যয় চালের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় খুচরা বাজারে প্রভাব পড়তে পারে। মিলমালিকরা ভবিষ্যতে মুনাফার আশায় ব্যাপক হারে ধান সংগ্রহ করেছে। এ অবস্থায় ধানের দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে চালের মূল্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, মিলমালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে চালের বাজার স্থিতিশীল করতে মিলমালিকদের সঙ্গে আলোচনার লক্ষ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করতে গত ২১ জুন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা সংক্রান্ত টাক্সফোর্স কমিঠির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুসারে ২২ থেকে ২৪ জুন রাজধানীর বাজারগুলোয় অভিযান চালিয়ে চারটি কারণ বের করে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ

অধিদপ্তর। ২৫ জুন বাণিজ্য সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে।

মহামারী করোনার মধ্যে যখন বিশ্ব স্থবির। ঠিক সেই সময়ে কৃষির ওপর ভর করে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু সেখানে গলদ রয়েছে। ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে কোনোভাবেই বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

জানা গেছে, বোরোর ফলন হয়েছে দুই কোটি টন। আর বড় কোনো বিপর্যয় ছাড়াই সব ধান কাটতে পেরেছিলেন কৃষক। কিন্তু তার পরও সব ধরনের চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বোরো ওঠার পর ধান-চালের দাম না কমে উল্টো বাড়ছে কেন এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।

অর্থনীতিবিদ ও চালকল মালিকরা বলছেন, নতুন এক মজুদদার গোষ্ঠী বাজারে ধান-চালের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন। দেশের অনানুষ্ঠানিক খাতের বিনিয়োগ করোনার কারণে থমকে আছে। এতে কিছু ব্যবসায়ী বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়ে যুক্ত হয়েছেন ধান-চালের ব্যবসায়। তারা ধান-চাল কিনে রাখছেন। এতে দাম বাড়ছে। এ জন্য তারা চালকল, আড়তদার ও পাইকার যেখানেই সিন্ডিকেট থাকুক না কেন তা ভাঙতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ ফেলো নাজনীন আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, দেশের বড় বড় চালকল মালিকের বিপুল পরিমাণে ধান-চাল মজুদের ক্ষমতা আছে। তারা ওই মজুদ দিয়ে বাজারে দামে প্রভাব ফেলতে পারেন এটি যেমন সত্য, তেমনি দাম বাড়তে থাকায় শহরের একদল ব্যবসায়ী গ্রামে গিয়ে ধান-চাল মজুদের ব্যবসায় নেমেছেন, সেটিও ঘটছে। কারণ এখন অন্য কোনোও ব্যবসা নেই। ফলে অনেকই চাল মজুদ করছে। কারণ সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই ত্রাণে চাল দেওয়া হয়। করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি-বেসরকারিভাবে চাল কেনা বেড়ে গেছে। এতে বাজারের ওপর চাপ পড়ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত সারাদেশে কোথায় কী পরিমাণে মজুদ হচ্ছে, তার খোঁজ নেওয়া। এবং সরকারি পর্যায়ে দ্রুত চাল কিনে তা বাজারে সরবরাহ করা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com