নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে দুটি টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। এ সফরের জন্য কাল দুই সংস্করণেই স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের নির্বাচকেরা। কোচ ও প্রধান নির্বাচক মিসবাহ-উল হক দলে তিনজন তরুণ পেসারকে ডেকে চমক সৃষ্টি করেছেন। যদিও দেশটির সাবেক পেসার আকিব জাভেদের বিশ্বাস, অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তান একটি ম্যাচও জিততে পারবে না।কিন্তু খোদ অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমেই শোরগোল পড়েছে পাকিস্তানের এক তরুণ পেসারকে নিয়ে।
তরুণ না বলে কিশোর বলাই ভালো। নাসিম শাহর বয়স যে মাত্র ১৬ বছর! টেস্ট দলে তাঁকে প্রথমবারের মতো ডেকেছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ নাসিমকে নিয়ে লিখেছে, নভেম্বরের গ্যাবা—যেখানে আশির দশকে থেকে হারেনি অস্ট্রেলিয়া। উইকেটে এলেন স্টিভ স্মিথ। পরিস্থিতি যাই হোক রান বের করতে তাঁর কোনো সমস্যা হয় না। অন্য প্রান্তে রান আপ নিতে প্রস্তুত নাসিম শাহ, ১৬ বছর বয়সী চমকপ্রদ ফাস্ট বোলার—টেস্ট ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে অভিষিক্ত।
গোটা দৃশ্যপটই কল্পনাপ্রসূত। অস্ট্রেলিয়ায় নাসিম শাহর অভিষেক ঘটবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। তবে মাত্র পাঁচটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতালব্ধ এ পেসারের জাতীয় দলে ডাক পাওয়াকে মিসবাহর ‘মাস্টার স্ট্রোক’ বলেই মনে করছে সংবাদমাধ্যমটি। ভীষণ গতিময় এ পেসার ‘লেট সুইং’ও শিখে ফেলেছেন এর মধ্যেই। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানেরা এর আগে তাঁকে কখনো খেলেনি। নাসিমকে খেলার আগেই পড়ে ফেলার জন্য আপাতত ইউটিউবই তাঁদের ভরসা। শুধু অস্ট্রেলিয়ানরা কেন ক্রিকেটমোদীরাও কিন্তু ইউটিউবে নাসিমকে মুগ্ধ।
অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য কাল টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। তাদের টেস্ট দলে ১৬ বছর বয়সী এক পেসারকে নিয়ে আলোচনা চলছে অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমে
তবে আনকোরা তরুণ পেসারকে হুট করে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলানোর বিপদও মনে করিয়ে দিয়েছে তারা। অস্ট্রেলিয়ান মানসিকতার কাছে মার খেয়ে যেতে পারে নাসিমের অনভিজ্ঞতা, যে কি না এখনো স্কুলই পার হাতে পারেনি। এমনকি ক্যারিয়ার শুরুর আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে! আর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনভিজ্ঞ পেসারদের এমন কিছুর শিকার হওয়া নতুন কিছু না। ঠিক এ যুক্তি থেকেই নাসিমকে দলে নেওয়া নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন পাকিস্তানের সাবেকরা। আকিব জাভেদ বিরোধিতা করলেও নাসিমকে দলে নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন শোয়েব আখতার। কিংবদন্তি এ পেসারের মতে, নাসিমকে বেশি পরিশ্রম না করিয়ে তাঁকে ‘ফুল অ্যাটাক’ করার ছাড়পত্র দেওয়া হোক।
পাকিস্তানে প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতে অভিষেকেই ৬ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন নাসিম। ঝরঝরে রান আপ, হুট করেই গতি বাড়ানোর ক্ষমতা এবং ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ৯০ মাইলের আশপাশে বল করতে পারেন নাসিম। আছে গুড লেংথ থেকে বল তোলার সামর্থ্যও। আর নতুন বলে ডান কিংবা বাঁ হাতি ব্যাটসম্যানকে খেলাতে পারেন ‘আউট সুইং’। পাকিস্তান খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ভবিষ্যৎ বলে মনে করছে।
শোয়েব আখতার এই তরুণের পক্ষ নিয়েই নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, ‘তাকে অতিরিক্ত অনুশীলন না করানোর পরামর্শ রইল বোর্ডের প্রতি। অস্ট্রেলিয়া তাকে কখনো খেলেনি। আশা করি যত জোরে সম্ভব বল করার স্বাধীনতা সে পাবে।’
কিন্তু তার আগে নাসিমকে তো মাঠে নামার সুযোগ পেতে হবে! আর তা নির্ভর করছে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর।