করোনাভাইরাস চিকিৎসায় গত ২১ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে রিজেন্ট হাসপাতালের চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানতেন না বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) অনুরোধে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলেও দাবি তার।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব দাবি করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নিজের উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজি অফিসে একটা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ছিল। সেখানে সচিবরাসহ অন্যান্য বক্তিরাও ছিল। ওখানে ডিজির অনুরোধে যে আপনারাও একটু থাকেন চুক্তি স্বাক্ষর হবে। কী স্বাক্ষর হবে… রিজেন্টের সঙ্গে স্বাক্ষর হবে। তো আমরাও সেখানে ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমরাও খুশি ছিলাম যে একটা নতুন হাসপাতাল আসল করোনার চিকিৎসা দিবে। প্রাইভেট তো তখন করোনার চিকিৎসা দিতে দ্বিধা করছিল।’
করোনা চিকিৎসায় রিজেন্ট হাসপাতালকে বাছাই করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালকে নিয়োগ দেওয়ার কাজ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রক্রিয়া মেনে তাদের নিয়োগ করা হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে মন্ত্রণালয় প্রশাসনিকভাবে কোনো কাজের ব্যাখ্যা চাইতেই পারে। এটি সরকারের প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কাজের অংশ। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সমস্যার কোনো ব্যাপার নয়। অধিদপ্তরের সাথে মন্ত্রণালয়ের কোনো সমস্যা নেই।‘
রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো নির্দেশনা দেয়নি বলে দাবি করেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় কোনো নির্দেশনা দিলে তো ফাইলেই থাকত। সেটার ব্যাখ্যা দিলেই তো পাবেন। আমরা অপেক্ষা করি, দেখি কী ব্যাখ্যা দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেকেজি ও রিজেন্ট হাসপাতালের অনৈতিক কর্মকাণ্ড কতটুকু হয়েছে, তা সরকার খতিয়ে দেখছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের কঠোর বিচার করতে হবে এবং তাদেরকে প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বিতর্কিত রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করা নিয়ে সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত শনিবার দাবি করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশে ওই চুক্তি করা হয়েছিল। এর পরদিন মন্ত্রণালয় থেকে অধিদপ্তরকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ’ বলতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কাকে বুঝিয়েছে, সে বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে ‘সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা’ দিতে হবে। ওই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার আগেই গতকাল মঙ্গলবার এ নিয়ে পাল্টা দাবি করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।