বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে নারীর তুলনায় বেশিসংখ্যক পুরুষ মারা যাচ্ছেন অথচ পুরুষরা মাস্ক পরতে চান না। সংবাাদমাধ্যম বিবিসি গতকাল এক প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিষয়টি উপস্থাপন করেছে। প্রতিদবেদনে ব্রাজিলের এক দম্পতির সংকট তুলে ধরা হয়েছে। এতে মনিকা ও তার স্বামী ইদোয়ারদোর কথা তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রাজিলে করোনা ভাইরাসের মারাত্মক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরই ব্রাজিলের অবস্থান। মনিকা ও তার স্বামী রিওডি জেনেরিওর কাছে নিটেরিওর একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন। শহরে এত করোনা প্রকোপ থাকা সত্ত্বেও তার স্বামী মাস্ক পরতে অস্বীকৃতি জানায়। বিবিসিকে মনিকা বলেন, আমার কোনো লক্ষণ নেই। আমি মনে করি করোনা ভাইরাস যে কোনো সময় আমাকে ঘায়েল করতে পারে, কিন্তু আমার স্বামী মনে করে যে, আমি ভীতু। সে (মনিকার স্বামী) বলে তার মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। এমনকি যখন সে বাসা থেকে বের হয়, সে দরজাও বন্ধ করে না। সেভাবে না যে, আমাকে ও আমার সন্তানকে সে বিপদে ফেলে যাচ্ছে। এ কারণে মনিকা স্বামীর ঘর ছেড়ে সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মনিকা ও ইদোয়ারদোরের গল্প চলমান মহামারী বিশ্বের নানা প্রান্তে ঘটে চলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের তুলনায় পুরুষরা ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী পরতে বেশি নারাজ। এমনকি পূর্বের মহামারীতেও এ ধরনের প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। আর বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৪৪ লাখের বেশি। বিভিন্ন দেশের পরিসংখ্যান বলছেÑ মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ফেস মাস্ক সংক্রমণ বিস্তার কমাতে সহায়তা করে এবং যেসব স্থানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কঠিন, সেসব স্থানে অবশ্যই ফেস মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে এখন ঘরের বাইরে ফেস মাস্ক অপরিহার্য করা হয়েছে। অনেক দেশে এ বিষয়ে আইন করা হয়েছে। আইন অমান্য করলে শাস্তিসহ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এক জরিপে দেখা গেছে, নারীদের চেয়ে পুরুষরা অনেক কম ফেস মাস্ক পরতে চান। শুধু তাই নয়, পুরুষরা মাস্ক পরাকে লজ্জাজনক, অস্বস্তিকর ও দুর্বলতার প্রতীক মনে করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে অন্য একটি কারণের কথা বলা হয়েছে।
সেখানে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই মাস্ক পরার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এ কারণে জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় রিপাবলিকান সমর্থকরা কম মাস্ক পরে থাকেন।