রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় ৩০ সেপ্টেম্বর, সুবিচারের আশায় মুসলিমরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২৪৮ বার

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বহুলালোচিত রাম মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায়ের দিকে নজর রাখছেন মুসলিমরা। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার প্রায় ২৮ বছর পরে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর একটি বিশেষ সিবিআই আদালত ওই মামলার রায় দেবে। বিজেপির অনেক সিনিয়র নেতা ওই মামলায় অভিযুক্ত।

আসন্ন রায় প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর সভাপতি সাইয়্যেদ সাদাতুল্লাহ হুসাইনি বলেছেন, ‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর যা ঘটেছিল তা ছিল একটি সুচিন্তিত কৌশল। এখন যখন রায় আসছে, আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। এক্ষেত্রে, সমস্ত ষড়যন্ত্রকারী সবার সামনে আছে, এটি কারো কাছ থেকে গোপনীয় বিষয় নয়। এটি দেশের বিচার ব্যবস্থারও পরীক্ষার মুহূর্ত।’

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের সদস্য কামাল ফারুকী বলেন, ‘২৭ বছর আগে অযোধ্যাতে যা ঘটেছিল তা রাতের অন্ধকারে নয় বরং দিনের আলোয় হয়েছিল। গোটা দেশ তা দেখেছিল। এক্ষেত্রে আদালতের রায়ে এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে দেশে পুনরায় কোনো ধর্মের ধর্মীয় স্থানের বিরুদ্ধাচরণে কারো কোনো সাহস না হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের বৃহত্তম অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। ওই ঘটনার কারণে, দেশের সামাজিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এজন্য ওই মামলায় আদালতের উচিত কোনো অভিযুক্তকে ছাড় না দেওয়া।’

বিশিষ্ট শিয়া আলেম মহসিন তাকভি বলেন, যে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ ভূমি বিবাদের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মুসলিম সম্প্রদায় খুব বেশি ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করে না। এই রায় ভূমি বিরোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখন অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিয়ে দেশ ও বিশ্বের সামনে নজির সৃষ্টি করার বিষয়টি আদালতের হাতে।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিশ-ই-মুশওয়ারাত-এর মাওলানা আবদুল হামীদ নোমানী বলেন, অযোধ্যা মামলার আগের রায়টিতে সুপ্রিম কোর্টও স্বীকার করেছিল যে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যাতে যা ঘটেছিল তা বেআইনি ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া উচিত। অন্যথায় তারা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানের বিরুদ্ধেও এ জাতীয় দুঃসাহস দেখাতে পারে।

অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় মোট ৪৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই মামলায় এখন ৩২ জন অভিযুক্ত রয়েছেন। বিজেপি’র সিনিয়র নেতা এলকে আদভানি, মুরালি মনোহর যোশী, উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, বিজেপি’র ফায়ার ব্র্যান্ড নেত্রী উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারসহ মোট ৩২ জন অভিযুক্ত। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ওই মামলার রায় ঘোষণা হবে। অভিযুক্ত সকলকে ৩০ সেপ্টেম্বর বিশেষ সিবিআই আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, এলকে আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, কল্যাণ সিং, উমা ভারতী, বিনয় কটিয়ার, সাধ্বী ঋতম্ভরা, মোহন্ত নৃত্য গোপাল দাস, ডাঃ রাম বিলাস বেদান্তি, চম্পত রাই, মোহন্ত ধর্মদাস, সতীশ প্রধান, পবন কুমার পান্ডে, লল্লু সিং, প্রকাশ শর্মা, বিজয় বাহাদুর সিং, সন্তোষ দুবে, গান্ধী যাদব, রামজি গুপ্ত, ব্রজভূষণ শরণ সিং, কমলেশ ত্রিপাঠি, রামচন্দ্র খত্রী, জয় ভগবান গোয়েল, ওম প্রকাশ পান্ডে, অমর নাথ গোয়েল, জয়ভান সিং পোওয়াইয়া, মহারাজ স্বামী সাক্ষী, বিনয় কুমার রাই, নবীন ভাই শুক্লা, আরএন শ্রীবাস্তব, আচার্য ধর্মেন্দ্র দেব, সুধীর কুমার কক্কর এবং ধর্মেন্দ্র সিং গুর্জর।

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েকশ’ বছরের পুরোনো বাবরি মসজিদ প্রকাশ্য দিবালোকে ধ্বংস করেছিল, ‘কর সেবক’ নামধারী উগ্র হিন্দুত্ববাদী ধর্মান্ধরা।

তাদের দাবি, ওই স্থানটি হিন্দুদের ভগবান রামের জন্মস্থান। সম্প্রতি সেই জমিতেই রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এরআগে সুপ্রিম কোর্ট সেখানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর পরে লক্ষনৌয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বিশেষ সিবিআই (কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা) আদালতে ওই মামলার রায় বেরোবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। পুবের কলম

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com