শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধ অব্যাহত, নিহত প্রায় একশ’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ২৩১ বার

যুদ্ধ থামছেই না রাশিয়ার মিত্র আর্মেনিয়া এবং তুরস্কের মিত্র আজারবাইজানের মধ্যে। রোববার পেরিয়ে সোমবার আরো ভয়াবহ হয়ে উঠে যুদ্ধ। এখনো চলছে সমান তালেই। প্রাণ হারিয়েছেন এক ডজন বেসামরিক মানুষসহ প্রায় একশ’ মানুষ। রোববার বিতর্কিত ভূখ- নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে যুদ্ধের শুরু। কে কাকে প্রথমে হামলা চালিয়েছে তা নিয়েও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন দাবি। দুই দেশই সীমান্তে নিজেদের সামরিক শক্তি সর্বোচ্চ করেছে। একটানা গুলি চলছেই।

থামার কোনো লক্ষণও নেই।

বিতর্কিত ভূখ-টির বাসিন্দাদের প্রায় সবাই আর্মেনীয়। এটির নিয়ন্ত্রণও করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই অঞ্চলটি আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত। যদিও আজারবাইজানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এই অঞ্চলের ওপরে। এখানে রয়েছে একটি স্বাধীন সরকার। তাদের রয়েছে আলাদা সেনাবাহিনী। রোববার শুরু হওয়া যুদ্ধে আর্মেনিয়ার সঙ্গে যোগ দিয়েছে নাগার্নো-কারাবাখের সেনারাও। যুদ্ধাঞ্চল হওয়ায় তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। দু’দিনে তারা হারিয়েছেন অন্তত ৮৪ সেনা।
ডয়েচে ভ্যালের খবরে বলা হয়েছে, সাবেক দুই সোভিয়েত রাষ্ট্র আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান। সোভিয়েতের পতনের পর এই দু’টি রাষ্ট্র আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু সীমান্তের নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। আজারবাইজানের অভিযোগÑ ওই অঞ্চল দখলে রেখেছে আর্মেনিয়া। তবে আর্মেনিয়ার দাবি, নাগার্নো-কারাবাখ তারা নিয়ন্ত্রণ করে না। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারাই এটির নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০১৬ সালেও এই নিয়ে কার্যত যুদ্ধ শুরু হয়েছিল দু’টি দেশের মধ্যে। তবে রোববার থেকে যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে, তা অতীতের সমস্ত সংঘাতকে ছাপিয়ে গেছে।
যুদ্ধ থামাতে জাতিসংঘ অবশ্য আবেদন জানিয়েছে। ফ্রান্স ও জার্মানির আহ্বানে পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই যুদ্ধের পিছনে হাত রয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়ার। সিরিয়া বহু যোদ্ধাকে আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সীমান্তে পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। আর্মেনিয়াকে চাপ দেয়ার চেষ্টা করছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, বিতর্কিত অঞ্চল থেকে আর্মেনিয়াকে সরে যেতে হবে। তবে তুরস্ককে গুনছে না আর্মেনিয়া। পাল্টা তুরস্ককে শাসাচ্ছে দেশটি। আর্মেনীয় কর্মকর্তারা তুরস্ককে আজারবাইজানে অস্ত্র ও সেনা মোতায়েনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন। অপরদিকে তুরস্কের কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবেই আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়ে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। দেশটির কয়েকটি গণমাধ্যমও আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে।
সোমবার আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তুরস্কের সেনা কর্মকর্তারা আজারবাইজানের হয়ে যুদ্ধ করছে। একইসঙ্গে তুরস্কের সমরযান এবং যুদ্ধবিমানও মোতায়েন করা হয়েছে দেশটিতে। আর্মেনিয়া জানিয়েছে, তুরস্ক বিদেশি সন্ত্রাসীদেরও মোতায়েন করছে আজারবাইজানে। তবে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ এমন দাবি অস্বীকার করেছে।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, তৃতীয় দিনের মতো চলতে থাকা যুদ্ধ বন্ধে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশগুলো। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এতে তিনি দ্রুততার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। এদিকে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ফ্রান্স। দেশটি জানিয়েছে, ককেশাস অঞ্চলের দেশ দু’টির মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তারা। এ নিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের প্রতি যুদ্ধ থামানোর অনুরোধ জানান। এদিকে তুরস্ককে নিয়ে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়াও। সাংবাদিকদের কাছে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ বলেন, আমরা তুরস্কসহ সকল পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ জন্য রাশিয়া তার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া, সংঘর্ষের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ওআইসি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com