শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন

ব্রিটেনে প্রবেশে ভিয়েতনামীদের চাঞ্চল্যকর তথ্য…?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২৯৮ বার

লন্ডন থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে গ্রেজ এলাকা একটি ট্রাকের ভিতর থেকে ৩৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গেই জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অনেকেই ভিয়েতনামের বাসিন্দা । তা, কেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিটেনে পাড়ি দিচ্ছেন তাঁর? উঠছে এই প্রশ্ন। বিষয়টি খতিয়ে দেখেন বিবিসি-র বিশেষ প্রতিনিধি লুসি উইলিয়ামসন।
ফ্রান্সের যে উপকূল থেকে ব্রিটেনে পাড়ি দিতে হয়, সেখান থেকে ঘণ্টাখানেক গাড়ি চালিয়ে লুসি উইলিয়ামসন দেখা পান জনা বারো ভিয়েতনামী পুরুষের। আগুন জ্বালিয়ে তার চারপাশে বসে চা খেতে খেতে এক ‘বসের’ ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। উইলিয়ামসনের প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা জানান, ‘বস’ নামে পরিচিত এই আফগান মানব পাচারকারী ব্রিটেনগামী লরিতে তাঁদের ঢুকিয়ে দেবে। আরও জানা গেল, এই ভিয়েতনামীদের একজনের নাম ডুক। লন্ডনে আসতে তিনি দেশেই এক পাচারকারীকে ৩০ হাজার ডলার দিয়েছেন। তারপর তাঁকে রাশিয়া, পোল্যান্ড, জার্মানি হয়ে ফ্রান্সের এই উপকূলের কাছে আনা হয়েছে। ডুক বলেন, ‘ব্রিটেনে আমার কয়েকজন বন্ধু আছে। পৌঁছাতে পারলে কাজ জোগাড় করে দেবে তাঁরা।
বিবিসি সূত্রে খবর, প্রধানত অর্থনৈতিক কারণেই চরম ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার ভিয়েতনামী ইউরোপের পথে পা বাড়াচ্ছে। যাঁরা আসছে তাঁদের অধিকাংশই মজুরি করে। মানব পাচারকারীদের ২৫ থেকে ৩০ হাজার পাউন্ড দিয়ে ইউরোপে ঢোকেতাঁরা। স্বভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে এত টাকা কোথা থেকে আসে। জানা গিয়েছে, আত্মীয় বা বন্ধুদের কাছ থেকে ধারদেনা করে বা চড়া সুদে মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হন প্রায় সবাই। অবৈধ ভিয়েতনামীরা সাধারণত ব্রিটেনের নেইল পার্লার এবং চিনা বা ভিয়েতনামী রেস্তোঁরায় কাজ করে। ভিয়েতনামের পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলিতে সাধারণ কায়িক পরিশ্রম করে বছরে বড় জোর ৭০০ থেকে ১০০০ পাউন্ড রোজগার করা সম্ভব। কিন্তু ব্রিটেনে ঢুকতে পারলে এক মাসেই তাদের পক্ষে সেই টাকা আয় করা সম্ভব। সেই টাকায় ধারদেনা মিটিয়ে দেওয়া হয়। এবার প্রশ্ন হচ্ছে , কীভাবে গবেষণায় ভিয়েতনামীরা ব্রিটেনে প্রবেশ করে?
বিবিসি’র রিপোর্ট মোতাবেক, যে পথে সময় কম লাগবে এবং ঝুঁকি কম, সেই পথে আসতে হলে বেশি টাকা দিতে হয়। যারা দাম দিতে পারে, তাঁদের শেংগেন বাণিজ্য ভিসার ব্যবস্থা করে সরাসরি বিমানে করে প্যারিসে আনা হয়। সেখানে তাঁদের নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করে সুযোগ বুঝে ব্রিটেনে পাচার করা হয়। যাঁদের সেই সামর্থ্য নেই তাদের ব্রিটেনে প্রবেশ করতে কয়েক মাস সময়ও লেগে যেতে পারে। সাধারণত ভিয়েতনাম থেকে তাদের বিমানে মস্কোতে আনা হয়। সেখান থেকে ট্রেনে বা লরিতে কয়েকটি দেশের ওপর দিয়ে গোপনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশে আনা হয়। তারপর ফ্রান্সের একটি ফেরি টার্মিনালে এনে মালবাহী ট্রাকের খুপরিতে বা মালের ভেতর ঢুকিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পার করে ব্রিটেনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ফ্রান্সে ঢোকার আগে তাদের অনেক সময় আধা ডজন দেশ পাড়ি দিতে হয়Ñবেলারুশ, লাতভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, সেøাভাকিয়া, জার্মানি এবং সর্বশেষে ফ্রান্স। অনেক সময় এসব দেশে থাকার সময় দালালের জন্য পয়সা জোগাড় করতে সেখানেই নামমাত্র মজুরিতে নির্যাতন সহ্য করে কাজ করার চেষ্টা করে এসব অবৈধ অভিবাসী।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com