মাত্র ১১ দিন পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচন। এবারের নির্বাচনের গতি প্রকৃতি, তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে অনেক নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষক রিগ্যান জমানার কথা স্মরণ করছেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯শ ৮০ ও ৮৪ সালে পর পর দুই বার ভূমিধ্বস বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। ডেমোক্রেটরা এবার হয়ত প্রেসিডেন্টে ছাড়াও কংগ্রেস ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে। যদিও মার্কিন জনগণ এক দলের ক্ষমতার চেয়ে ভারসাম্য রক্ষায় অধিক সচেতন। ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন প্রতিপক্ষ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডলান্ড ট্রাম্পের চাইতে প্রত্যেকটি জরিপে ভাল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এমনকি রিপাবলিকান ঘেঁষা ফক্স নিউজের জরিপে বাইডেন অগ্রগামী। জাতীয়ভাবে বাইডেন শতকরা ১১ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।
আসন্ন নির্বাচনে ওহাইয়ো, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোলিনা ও আইওয়া অঙ্গরাজ্যকে ব্যাটল গ্রাউন্ড হিসাবে বিবেচনায় আনা হয়েছে।
পেনসেলভেনিয়ায় সর্বশেষ আরসিপি, ইপসোস পরিচালিত জরিপে বাইডেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ৪ শতাংশের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। বাইডেন ৪৯ এবং ট্রাম্প ৪৫ শতাংশ। উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের আরসিপি জরিপে বাইডেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে শতকরা ৬ দশমিক ২ ও ইপসোস জরিপে ৮ শতাংশ ব্যবধানে অগ্রগামী। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৪৩ শতাংশ এবং বাইডেন যথাক্রমে ৪৯ দশমিক ৮ এবং ৫১ ব্যবধানে এগিয়ে। মিশিগানে বাইডেন ৬ দশমিক ৮ ও ৮ শতাংশে অগ্রগামী বলছে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠান দুটির জরিপের ফল। এখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৪৩ এবং জো বাইডেন যথাক্রমে শতকরা ৪৯ দশমিক ৮ ও ৫১। গত ১৯ অক্টোবর এই জরিপ কাজ পরিচালিত হয়।
মিনেসোটায় আরসিপি জরিপে ট্রাম্প ৪০ দশমিক ৭ এবং বাইডেন ৪৭ দশমিক ৭ ও ইপসোস জরিপে বাইডেন ৫২ এবং ট্রাম্প ৪১ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে। ব্যাটলগ্রাউন্ড ওহাইয়োয় আরসিপি জরিপে ট্রাম্প শূন্য দশমিক ৫ ও কুইনিপ্যাক ইউনিভার্সিটি জরিপে বাইডেন ১ শতাংশে অগ্রগামী।
অর্থাৎ ট্রাম্প ৪৬ এবং বাইডেন ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ফ্লোরিডায় আরসিপি জরিপে ট্রাম্প ৪৬ দশমিক ৮ আর বাইডেন ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। এখানে ব্যবধান ১দশমিক ৪ শতাংশ। জর্জিয়ায় বাইডেন এগিয়ে। উভয়ের ব্যবধান ১ দশমিক ২ থেকে ২ শতাংশ। নর্থ ক্যারোলিনায় আরসিপির জরিপে শতকরা ২ দশমিক ৭ পয়েন্টে বাইডেন এগিয়ে। আইওয়া অঙ্গরাজ্যে ডেভিড বাইন্ডারের জরিপে ট্রাম্প ৬ পয়েন্টে বাইডেনের চেয়ে অগ্রগামী। আবার আরসিপি জরিপে ১ দশমিক ২ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন।
তবে এসব জরিপের বিষয়ে বাইডেন ক্যাম্পেইন এবার খুবই সর্তক। তার ক্যাম্পেইন ম্যানেজার জ্যান ডিলন কর্মী সমর্থকদের এক লিখিত পত্রে জানান, এসব জরিপ সঠিক নাও হতে পারে।তাই এতে আত্মতৃপ্তির কোন অবকাশ নেই। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থেকে কাজ করে যেতে হবে।
ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে লড়াই হবে একবারে হাড্ডাহাড্ডি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এবার জিতে আসতে হলে সবগুলো ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য সহ আরিজোনা, পেনসেলভেনিয়া অথবা মিশিগান এর যে কোন একটিতে অবশ্যই জয়লাভ করতে হবে। প্রথাগতভাবে ডেমোক্রেট এই দুই রাজ্যেই তিনি হিলারীর সাথে জিতে ছিলেন। কিন্তু এবার তা কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। রিপাবলিকান রাজ্য আরিজোনা এবার রঙ বদলাতে শুরু কেরেছে। লাল থেকে ক্রমশঃ নীল হচ্ছে। পক্ষান্তরে বাইডেনকে বিজয়ী হতে হলে ডেমোক্রেট শিবিরের রাজ্যগুলো ধরে রেখে পেনসেলভেনিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন ও মিনেসোটা পুনরুদ্ধারে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। আর তা হলে ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে তিনি হারলেও প্রেসিডেন্টের সোনার মুকুট বাইডেনের মাথায় শোভা পাবে এমটা বলা যায়।