৩ নভেম্বর, মঙ্গলবার বহুল প্রতিক্ষীত যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। মার্কিনীরা এমন এক কঠিন সময়ে ভোট দিতে চলেছে যখন করোনায় ক্ষত-বিক্ষত গোটা দেশ। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কোভিড-১৯-এর প্রকোপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। দীর্ঘ সময়ের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন ও প্রচার-প্রচারণার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। ইতিমধ্যে নয় কোটির বেশি ভোটার তাদের ভোটের কাজ সেরে ফেলেছেন। আগাম ভোটের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে বহু রাজ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে অধিক ভোট কাস্টিং হবে এবার এমন ধারণা করছেন পর্যবেক্ষক মহল।
সকল ক্ষুদ্র ও ইমিগ্র্যান্ট জাতিগোষ্ঠীর মতো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি-আমেরিকানরা বাইডেন- হ্যারিসের দিকেই ঝুঁকে আছেন। ভোট দিবেন ডেমোক্রেট প্রার্থীদের। সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ তাকিয়ে আছে কার ভাগ্য খুলে দেবে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতার দরোজা। বরাবর নির্বাচন শেষে মধ্যরাতের ভেতর ফলাফল জানা গেলেও নানা কারণে এবার তা বিলম্বিত হতে পারে। পপুলার ভোটের পাশাপাশি ম্যাজিক ২৭০ ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে জিতলে তবেই পাওয়া যাবে সাদা ঘরের চাবি। ৫৩৮ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০ ভোট।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ টি রাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসি মিলে এই ইলেক্টোরাল কলেজের সমাহার। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে অঙ্গিকার না করলেও তার হোয়াইট হাউস সব হিসেব-নিকাশই খতিয়ে দেখছে। এই নির্বাচনে প্রায় সকল জরিপের ফলাফলে ডেমোক্রেট পার্টির প্রার্থী জোসেফ বাইডেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ১০ থেকে ১২ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন জাতীয়ভাবে। ট্রাম্প সমর্থকরা এসব জরিপে কান দিচ্ছেন না। তাদের বদ্ধমূল বিশ্বাস, ২০১৬ সালের মতো ট্রাম্প এবারও তার ক্যারিশমা দেখাবেন। ইলেকশনে বাইডেনকে হারিয়ে তিনিই জিতবেন।
আসন্ন নির্বাচনে যেসব রাজ্যের ভোটের ফলাফল ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভানিয়ায় ৭, মিশিগানে ৮, উইসকনসিনে ৯ পয়েন্টের ব্যবধান নিয়ে জরিপে বাইডেন অগ্রগামী রয়েছেন।
এবার এবসেন্টি ও ডাকযোগে ভোটের স্রোত অব্যাহত থাকায় কোনো কোনো রাজ্যে গণনার পর ফলাফল আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। বিশেষ করে ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভানিয়া এবং মিশিগানের ক্ষেত্রে। ইউএস সুপ্রিমকোর্ট এক রায়ে পেনসিলভানিয়ায় ডাকযোগে ভোট গ্রহণের সময়সীমা ৬ নভেম্বর এবং নর্থ ক্যারোলিনায় ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন। ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের নানারকম জটিল অংক কষে কষে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে মার্কিন মিডিয়া। তবে এই যোগ বিয়োগের হিসেবে তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বাইডেনকে এগিয়ে রাখছে সকলেই।
৮২ বছর বয়সী পেনসিলভানিয়ার ফ্লিটউডের বাসিন্দা গেরাল্ডিন ফল্ক ডাকযোগে ইতিমধ্যে তার ভোট পাঠিয়ে দিয়েছেন।এই অশিতীপর বৃদ্ধা তার জীবনে এই প্রথম কোন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিলেন। জীবনে এর আগে তিনি ভোট দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। কিন্তু এবারের নির্বাচন তার কাছে খুবই গুরত্বপূর্ণ। বাইডেনকে ভোট দিয়েছেন বলে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন তিনি।