ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য মিশিগানে জয়ের ফলে সব মিলিয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেনের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬৪। প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০ ভোট। এখন এগিয়ে থাকা আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদায় (৬টি ইলেকটোরাল ভোট) জয় পেলেই কাঙ্ক্ষিত ‘ম্যাজিক ফিগার’ অর্জন করবেন তিনি।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র এক সাংবাদিক জন কিং তার বিশ্লেষণে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল পর্যন্ত বাইডেন এগিয়ে আছেন। যদি নেভাদা ও অ্যারিজোনায় জেতেন তাহলেই প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট নিশ্চিত করে ফেলবেন তিনি।
নেভাদা ও অ্যারিজোনায় এখনো এগিয়ে আছেন বাইডেন। কিন্তু ফল গণনায় ক্ষণে ক্ষণে পাল্টে যাচ্ছে চিত্র। অ্যারিজোনায় (১১ ইলেকটোরাল ভোট) জয় প্রায় নিশ্চিত বাইডেনের। ২০১৬ সালে এই রাজ্যে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প।
সাংবাদিক জন কিং আরও বলেন, নেভাদা ও অ্যারিজোনায় জয় পেলে বাইডেনের পেনসিলভানিয়ায় জয় প্রয়োজন হবে না। কারণ, এই দুই রাজ্যের কাঙ্ক্ষিত ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট হতে যথেষ্ট।
নেভাদায় এখন পর্যন্ত গণনা হওয়া ভোটের ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ। রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। মূলত এ রাজ্যে জয়-পরাজয়ের নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হওয়ার ভাগ্য।
এখনো জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা ও পেনসিলভানিয়ার ফল আসেনি। এই তিন রাজ্যে যথাক্রমে ১৬, ১৫ ও ২০টি কাঙ্ক্ষিত ২৭০ ভোট রয়েছে। নেভাদায় বাইডেন যদি জয় পান, আর বাকি তিন রাজ্যে ট্রাম্প জিতলে তার কাঙ্ক্ষিত ২৭০ ভোট দাঁড়াবে ২৬৮টিতে। এতে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ হবে না তার।
এদিকে নিজেকে জয়ী দাবি করে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন রিপাবলিকান ট্রাম্প। মিশিগান, উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ার ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানিয়ে মামলা করেছে তার নির্বাচন শিবির। আগে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনঃগণনার দাবি তুলেছিল ট্রাম্পের নির্বাচন কর্মীরা। কিন্তু সেখানে মামলা করা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট শেষ হওয়ার পর গণনা বন্ধে তিনটি অঙ্গরাজ্যে মামলা করেছে ট্রাম্প শিবির। পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও জর্জিয়াতে মামলার আগে মিশিগানে ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবির।
এক বিবৃতিতে ট্রাম্প শিবিরের ব্যবস্থাপক বিল স্টেপিন বলেন, মিশিগানের আইন অনুযায়ী ভোট গণনার নির্ধারিত জায়গায় ট্রাম্পের লোকজনকে উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সে কারণে তাদের পক্ষে ব্যালট পেপার খোলা ও ভোট গণনার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ সম্ভব হয়নি।
এদিকে ভোট গণনা নিয়ে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে থাকা সংগঠন যখন লাগাতার প্রশ্ন তুলে যাচ্ছিলেন, ঠিক সেইসময়ই তাকে বড় ধাক্কা দেন বাইডেন। ২০১৬ সালে ট্রাম্পের জেতা উইসকনসিন এবং মিশিগানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।
উইসকনসিনে বাইডেন পেয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৮৯ ভোট। মিশিগানে পেয়েছেন ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ ভোট। অপরদিকে উইসকনসিনে ট্রাম্প পেয়েছেন ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৬০ ভোট, মিশিগানে পেয়েছেন ১৬ লাখ ৯ হাজার ৮৭৯ ভোট।
উইসকনসিনে ১০ আর মিশিগানের ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিয়ে বাইডেনের বর্তমান ভোট সংখ্যা ২৬৪টি। ট্রাম্প এখন পর্যন্ত পেয়েছেন ২১৪ ভোট। মোট ৫৩৮ ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০ ভোট।
জো বাইডেন এ পর্যন্ত ভোট পেয়েছেন ৭১ মিলিয়নের বেশি, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৬৪ মিলিয়নের বেশি ভোট।