ওয়াশিংটন ডিসিতে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ থেকে পুলিশ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রমাণিত ‘ভোট জালিয়াতির’ অভিযোগকে সমর্থন করে শনিবার বিক্ষোভ করেন তার সমর্থকরা। এ সময়ে প্রতিপক্ষও বিক্ষোভ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। কমপক্ষে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টকে উদ্ধৃত করে অনলাইন স্কাইনিউজ, বিবিসি এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, দুটি বড় বিক্ষোভকারী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী হোয়াইট হাউজের কাছে ফ্রিডম প্লাজা থেকে ক্যাপিটল হিলে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। ট্রাম্পপন্থি বিক্ষোভ চলাকালে এর ভিতর দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে বহনকারী তার গাড়ি যেতে দেখা যায়।
এসময় তিনি ভার্জিনিয়ার স্টারলিং গলফ কোর্সের দিকে যাচ্ছিলেন। ট্রাম্প তখন ছিলেন তার লাল বেসবল ক্যাপ পরা। বিক্ষোভকারীদের দিকে তাকে হাত নাড়াতে দেখা যায় গাড়ির ভিতর থেকে।
৩রা নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এখন ডেমোক্রেট জো বাইডেন। কিন্তু রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনের ফল মেনে নিতে এখনও অস্বীকৃতি জানিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের ফলকে উল্টে দিতে তিনি আইনি লড়াই শুরু করেছেন। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটে অনিয়মের কোনো গুরুত্বর তথ্যপ্রমাণ তারা দেখতে পান নি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার শিবির এসব সাক্ষ্যপ্রমাণ নিতে নারাজ। এমনকি রিপাবলিকান সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ তাকে পরাজয় মেনে নিতে অনুরোধ করেছেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তা সত্ত্বেও ট্রাম্প গোঁ ধরেছেন, নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে নেতাকর্মীরা শনিবার বিক্ষোভে নামেন। তাদের এই বিক্ষোভকে নাম দেয়া হয়েছে ‘মিলিয়ন মেগা মার্চ’। এতে বিক্ষোভকারীদের হাতে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার স্লোগান ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ লেখা ব্যানার দেখা যায়। এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করেছেন। বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ ভোটে জালিয়াতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। জালিয়াতি এবং দুর্নীতির নির্বাচনের পক্ষে তারা থাকবে না। তবে এই বিক্ষোভে কি পরিমাণ মানুষের জমায়েত হয়েছিল সে বিষয়ে পুলিশ সরকারি কোনো বিবৃতি দেয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ট্রাম্পের অনুমানের চেয়ে অনেক কম মানুষ উপস্থিত হয়েছিল।
ট্রাম্পের ছেলে ডনাল্ড তারকা জুনিয়র ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচ থেকে ওয়াশিংটন সফর করেছেন। তিনি একটি বড় বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। এ সময় ওই বিক্ষোভে একটি পতাকা ছিল, যাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি বড় ছবি ছিল। তিনি বলেছেন, আমি বলবো এই নির্বাচন অনেক দিক থেকে জালিয়াতির ছিল। একই সঙ্গে মিডিয়া ছিল পক্ষপাতী। তারা লাখ লাখ মার্কিনিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন জো বাইডেনকে ভোট দিতে। তারা ট্রাম্পকে ঘৃণা করে।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাল্টা কিছু বিক্ষোভকারী কালো ছাতা ও শিল্ড ব্যবহার করেন। তারা ট্রাম্পের সমর্থকদের নাৎসী বলে অভিহিত করেন। রয়টার্সের সাংবাদিকরা প্রত্যক্ষ করেন যে, কমপক্ষে অর্ধ ডজন মানুষ ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয়ে যায়। এ সময় বেশ উত্তেজনা দেখা যায়। তবে তা ছিল বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ সময়ে একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তাকে দ্রুত একটি ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।