বিস্ময়কর এক ঘটনা ঘটেছে। ২৮ বছর বয়সী মিসেস গিবসন নামে এক স্কুলশিক্ষিকা কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। কিন্তু যে ভ্রুণ থেকে তার মেয়ের জন্ম, ওই ভ্রুণের বয়সই ২৭ বছর।
দীর্ঘ ২৭ বছর সংরক্ষণ করে রাখা ভ্রুণ থেকে শিশু জন্মের ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকায়। এত পুরনো হিমায়িত ভ্রুণ থেকে মানব শিশু জন্মানোর এটি বিশ্ব রেকর্ড। ওই শিশুর নাম রাখা হয়েছে মলি গিবসন। গত অক্টোবরে তার জন্ম হয় বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, গিবসন দম্পতির সন্তান হচ্ছিল না। সে সময় গিবসনের বাবা স্থানীয় এক পত্রিকায় ভ্রুণ গ্রহণের মাধ্যমে সন্তান লাভের একটি খবর পড়েন। এরপর ভ্রূণ গ্রহণের মাধ্যমে গিবসন দম্পতি সন্তান নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
গিবসন দম্পতি ভ্রুণ অ্যাডাপ্ট করে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো একটি কন্যা সন্তান লাভ করেন। ওই শিশুটির নাম রাখা হয় ইমা। ইমার জন্মের প্রায় ৩ বছর ২০২০ সালে গিবসন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান মলি জন্ম নেয়। সম্পর্কে ইমা ও মলি দুজন জেনেটিক্যালি বোন। তবে গিবসন সম্পতি তাদের জেনেটিক্যাল বাবা-মা নন।
গিবসন দম্পতি আমেরিকার জাতীয় ভ্রুণ দান কেন্দ্র (এনইডিসি) থেকে ভ্রুণ গ্রহণ করেন। এনইডিসি’র তথ্য মতে, যে ভ্রুণ থেকে মলি গিবসনের জন্ম তা ১৯৯২ সালের অক্টোবরে হিমায়িত করে রাখা হয়। যখন মিসেস গিবসনের বয়স মাত্র এক বছর।
এনইডিসি জানায়, ভ্রুণ সংরক্ষণের ২৪ বছর পর ইমার জন্ম। তখন এটাই ছিল সবচেয়ে বয়স্ক ভ্রূণ থেকে শিশু জন্মের রেকর্ড। মলির জন্মের মধ্য দিয়ে রেকর্ডটি ভাঙলো।
মলির জন্মে উচ্ছ্বসিত মিসেস গিবসন। তিনি বলেন, ‘আমরা যেন হাতে একটি চাঁদ পেয়েছি। আমার এখনো সব স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। পাঁচ বছর আগেও কেউ যদি বলত তোমার আরও একটি মেয়ে আছে, আমি নিশ্চয়ই তাকে পাগল বলতাম।’
প্রসঙ্গত, এনইডিসি একটি অলাভজনক সংগঠন। তারা মানুষকে ভ্রুণ দান করতে উৎসাহিত করে এবং অনুর্বর দম্পতিকে ভ্রূণ দান করে। এনইডিসি’র তথ্য অনুযায়ী আমেরিকায় বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ ভ্রুণ হিমায়িত করে সংরক্ষণ করা আছে।
উল্লেখ্য, হিমায়িত ভ্রুণ থেকে প্রথম শিশু জন্ম নেয় ১৯৮৪ সালে অস্ট্রেলিয়ায়।