১৫ই নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের ৫৬টি দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫০০ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। জেনেভাভিত্তিক সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রেস এমব্লেম ক্যাম্পেইন (পিইসি) সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, এ সময় পর্যন্ত বিশ্বে কমপক্ষে ৪৬২ জন সাংবাদিক মারা গেছেন। এর অর্ধেকেরও বেশির বয়স ৬০ বছরের নিচে। যেসব সাংবাদিক করোনায় মারা গেছেন তার অর্ধেকেরও বেশি লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর। তাদের সংখ্যা ২৫১। অন্যদিকে বাংলাদেশে মারা গেছেন ৩৫ জন সাংবাদিক। পিইসির মহাসচিব ব্লেইস লেম্পেন এক সাক্ষাৎকারে গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্ককে (জিআইজেএন) বলেছেন, করোনায় মৃত সাংবাদিকের প্রকৃত সংখ্যা ৪৬২-এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।
হিসাবে বলা হয়েছে, সাংবাদিক সমাজ সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে পেরুতে। সেখানে করোনায় মারা গেছেন ৯৩ জন। ভারতে মারা গেছেন ৪৭ জন। ইকুয়েডরে মারা গেছেন ৪১ জন। ব্রাজিলে মারা গেছেন ৩৬ জন। ঢাকা ভিত্তিক সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক গ্রুপ ‘আওয়ার মিডিয়া, আওয়ার রাইটস’ হিসাব কষে দেখেছে, করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশের ১৯১ টি মিডিয়া হাউজের এক হাজার ১০ জন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯৪২ জন। ওই মিডিয়া গ্রুপের সমন্বয়ক আহমেদ ফয়েজ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই বলে যে, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাপ, সঙ্গে চাকরিচ্যুতির আতঙ্কে রিপোর্টাররা মাঠ পর্যায়ে এবং নিউজরুমে বড় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি আরো বলেছেন, চাকরি বাঁচাতে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক অফিসে আসেন। কারণ, মিডিয়া জগতের বিপুল সংখ্যক সদস্য করোনাকালে তাদের চাকরি হারিয়েছেন। সহকর্মীর করোনা পজেটিভ থাকলেও অনেকে অফিসে বসে কাজ করছেন। তাই কীভাবে তারা ইভেন্ট কভার করবেন এবং অফিসের ভিতরে আসন বিন্যাস কেমন হবে সে বিষয়ে অবিলম্বে মিডিয়া হাউজগুলোর নির্দেশনা তৈরি করা উচিত।
লেম্পেন বলেছেন, আমাকে সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করে যে বিষয়টি তা হলো, যেসব সাংবাদিক মারা গেছেন তারা তুলনামূলকভাবে কম বয়সী। অক্টোবরের প্রথম দিক থেকে যেসব সাংবাদিক মারা গেছেন তাদের অর্ধেকের বেশির বয়স ৬০ বছরের নিচে। কারো বয়স ৪০ এর কোটায়। কেউ ৫০ এর কোটার। সংক্রমণের উৎস জানা সব সময় অনেক জটিল। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের উল্লেখ করে লেম্পেন বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু রাজনীতিক বিষয়টাকে আরো খারাপ করে তুলছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বেদনাবোধ করি এ জন্য যে, ডনাল্ড ট্রাম্প অথবা জায়ের বোলসনারোর মতো রাজনৈতিক নেতারা যেসব সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন, তারা তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেন।