ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত তিন বছরের প্রেসিডেন্সির সবচেয়ে বিপজ্জনক সময় শুরু হলো গতকাল বুধবার থেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায় কি না, তা নিয়ে যে তদন্ত চলছে তার প্রকাশ্য শুনানি গতকাল শুরু হয়েছে। বিষয়টি ট্রাম্পের জন্য যতটা মর্মপীড়ার কারণই হোক না একপক্ষ একে দেখছে উত্সবের দৃষ্টিতে। এ কারণেই টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে যে শুনানি চলছে তাতে দেখা গেছে আতশবাজিও ফোটানো হচ্ছে। ঘটনার শুরু স্বার্থ উদ্ধারে কূটনৈতিক চ্যানেল এড়িয়ে ছোট্ট একটি চেষ্টার মধ্য দিয়ে। প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে এই তদন্তসংক্রান্ত শুনানি বন্ধ দরজার ওপাশে চলছে। গতকাল থেকে এই শুনানি প্রকাশ্যে এলো। গত কয়েক সপ্তাহে যাঁরা শুনানিতে অংশ নিয়েছেন তাঁদের দেওয়া তথ্য মতে, এই সংকটের জন্ম সম্ভবত ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি গিলিয়ানির হাত ধরে। নিউ ইয়র্কের সাবেক এই মেয়র দাবি করেন, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার চলাকালে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে যে প্রচার রয়েছে, তা ভুল। হস্তক্ষেপ করেছে প্রকৃতপক্ষে ইউক্রেন, তাও হিলারির পক্ষে।
গিলিয়ানির এই তত্ত্ব হালে পানি না পেলেও ট্রাম্পের সমর্থকদের বেশ মনে ধরে। গিলিয়ানি আরো দাবি করেন, ঘটনার সময় সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রভাব খাটিয়ে ইউক্রেনের এক আইনজীবীকে বরখাস্ত করেন। এই আইনজীবী ভিক্টর শোকিন বাইডেনের ছেলে হান্টারের দুর্নীতি তদন্ত করছিলেন। ইউক্রেনের বুরিসমা নামের এক তেল কম্পানিতে শেয়ার ছিল হান্টারের। সেখানেই দুর্নীতির কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে শোকিনের বিরুদ্ধে আগে থেকেই পশ্চিমা দেশ ও আইএমএফের দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় এসব দেশের চাপের কারণেই। এ বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে এগোনোর চেষ্টা করেন গিলিয়ানি। তিনি ইউক্রেনের ওপর হান্টারের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর জন্য চাপ দেন।
এ কাজে সুবিধার জন্য তিনি গত মে মাসে ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মারিয়া ইভানোভিচকে সময়ের আগেই সরিয়ে দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ইউক্রেনের কাছে গিলিয়ানির দাবি ছিল, হান্টারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তের সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে। এ নিয়ে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পেরও কথা বলিয়ে দেন। সে ক্ষেত্রেও একই বার্তা দেওয়া হয়। সূত্র : এএফপি।