অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ১৮ হাজার অধিবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
টানা কয়েকদিনের মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে অঙ্গরাজ্যটির রাজধানী সিডনি এবং দক্ষিণ-পূর্বের আরেক অঙ্গরাজ্য কুইন্সল্যান্ডের আশপাশের নদীতে পানি বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে বাঁধ উপচে পানি ঢুকে যাচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবারের বন্যা গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্রতা নিয়ে আঘাত হেনেছে। এই বন্যা প্রায় পুরো সপ্তাহজুড়ে চলতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে জনগণকে সতর্ক থাকার জোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বন্যার কারণে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া অধিবাসীদের সাহায্যে তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
নিউ সাউথ ওয়েলসের স্থানীয় সরকার প্রধান গ্ল্যাডিস বেরেজিকলিয়ান জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল পর্যন্ত বন্যায় কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ‘আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার মধ্যে প্রাণহানি না হওয়ার বিষয়টি অলৌকিক’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে প্রাণহানি না হলেও বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে। আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস। এ বছর বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর কয়েকটি গত গ্রীষ্মে দাবানল আর খরায় পড়েছিল বলে জানান বেরেজিকলিয়ান।
বন্যায় আটকে পড়া লোকজনদের সাহায্যে কাজ করে যাচ্ছে জরুরি সেবা সংস্থা এবং উদ্ধারকারী দলগুলো। ইতোমধ্যে এরা ৭৫০টিরও বেশি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে,কিছু কিছু এলাকায় এবার ৯০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যাকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের বহু এলাকার বর্তমান অবস্থাকে ‘অভ্যন্তরীণ সমুদ্র’ বলেও মন্তব্য করেছে আবহাওয়া অফিস।